1. bulletindhaka9@gmail.com : ঢাকা বুলেটিন : ঢাকা বুলেটিন
  2. info@www.dhakabulletin.news : ঢাকা বুলেটিন :
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
পোপের ঐতিহাসিক অংশগ্রহণে আলোচিত জি-৭ সম্মেলন চীনের কর্তৃত্ববাদী শাসন মডেল রপ্তানির অভিযোগ: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রসারিত হচ্ছে আদর্শ? ভোলায় বিয়ের শাড়ি নিয়ে সংঘর্ষ: বরসহ আহত ১৫, পণ্ড হলো বিয়ের অনুষ্ঠান পবিপ্রবির আইকিউএসি-র নতুন পরিচালক হিসেবে ড. মাহবুব রব্বানী দায়িত্ব গ্রহণ কুখ্যাত মাদক কারবারি আব্দুল্লাহসহ গ্রেপ্তার-২ নিখোঁজের দু’দিন পর মিললো যুবতীর মরদেহ কৃষকরা মাঠে ধান ফলানোর দৃশ্য মনে করিয়ে দেয় “বাংলাদেশ আমাদের সোনার বাংলাদেশ মন্দিরের দড়জা ভেঙে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি মৌলভীবাজারে সীমান্তে আরও ১২ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ স্পেসএক্স রকেটে অক্সিজেন লিক, এক্সিওম মিশন ৪ উৎক্ষেপণ স্থগিত করল NASA

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতাল: ৬০০ কোটি টাকার সেবা প্রতিষ্ঠান এখন ‘আবাসিক হোটেল’!

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

দেশের একমাত্র অত্যাধুনিক সরকারি চক্ষু হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, যার নির্মাণ ও সরঞ্জামে ব্যয় হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, তা গত ১৩ দিন ধরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে জুলাই আন্দোলনে আহত কিছু ব্যক্তির দখলে রয়েছে। হাসপাতালটি এখন যেন তাদের জন্য ‘আবাসিক হোটেল’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৫,০০০ রোগী এখান থেকে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন।

গত ২৮ মে, ‘ভুল বোঝাবুঝি’র জেরে জুলাই আন্দোলনে আহতরা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১৫ জন আহত হন। নিরাপত্তারক্ষীদের তালাবদ্ধ গেট ভেঙে লাঠিসোঁটা ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানোর ঘটনায় চিকিৎসক-কর্মীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপর থেকে হাসপাতালের সব সেবা বন্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার আহতদের জন্য খাবার সরবরাহ করলেও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে।

৪ জুন পুলিশি পাহারায় জরুরি বিভাগ চালু করা হলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। দেশসেরা চক্ষু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ৫৫ জন ভর্তি আহতের মধ্যে ৩০ জনের সঙ্গে বৈঠক করে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল, আহতদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই; তাদের ছাড়পত্র দিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফলোআপের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আহতদের একাংশ এই সিদ্ধান্ত মানেনি, রিলিজ পেপার ছিঁড়ে ফেলে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এতে আবারও কয়েকজন চিকিৎসক হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

জুলাই আহতরা হাসপাতাল দখল করে রাখার পেছনে পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে:

  1. পুনর্বাসন ও বিদেশে চিকিৎসার আশা: হাসপাতালে থাকলে সরকারের নজরে থাকা যায় এবং ইউরোপ-আমেরিকায় চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের সম্ভাবনা বাড়ে।
  2. অনৈতিক কার্যক্রম: কেউ কেউ ভর্তি, অপারেশনের সিরিয়াল বা নিয়োগ-টেন্ডারে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন।
  3. থাকার জায়গার অভাব: ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় এবং কারো কারো বিরুদ্ধে মাদক মামলা থাকায় হাসপাতালে থাকছেন।
  4. রাজনৈতিক কর্মসূচি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচিতে অংশ নিতে হাসপাতালে অবস্থান।
  5. সুবিধা ভোগ: হাসপাতালে থাকলে খাবার ও থাকার সুবিধা পাওয়া যায়, এবং সরকারের কাছ থেকে ফ্ল্যাট বা অন্য সুবিধা আদায়ের সম্ভাবনা থাকে।

৬ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে মাত্র ৪ জন ভর্তি এবং ৩ জন বহিরাগত আহত অবস্থান করছেন। বাকিরা বাড়ি গেলেও রিলিজ নেননি, যাতে সুবিধামতো ফিরে আসতে পারেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানান, আহতরা হাসপাতালকে দাবি আদায়ের ‘বার্গেনিং’য়ের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, “জুলাই আহতদের ত্যাগকে আমরা সম্মান করি। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, এমনকি বিদেশেও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন তাদের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য এই বিশেষায়িত হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই।” তিনি পুনর্বাসনের দাবি সমর্থন করলেও হাসপাতাল দখলকে অগ্রহণযোগ্য বলছেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জানান, “আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। আহতদের বিদেশে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি বিবেচনাধীন।” ঈদের ছুটির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক জানান, “এই ঘটনা জুলাই আহতদের ত্যাগকে বিতর্কিত করছে। সরকার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র নেতাদের সমন্বিত কঠিন সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।”

জুলাই আহতদের একজন, হিল্লোল, বলেন, “আমরা আর দাবি নিয়ে কথা বলতে চাই না। সরকার যা ভালো মনে করে করুক। তবে হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।”

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের এই সংকট দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আহতদের পুনর্বাসন ও বিকল্প থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা জরুরি। অন্যথায়, এই প্রতিষ্ঠানটি তার মূল উদ্দেশ্য—চক্ষু চিকিৎসা প্রদান—থেকে বিচ্যুত হয়ে থাকবে, যা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট