
আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা (IRENA)–এর মহাপরিচালক ফ্রান্সেস্কো লা ক্যামেরা বলেছেন, এ বছরের জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন COP30–এ টেকসই বায়োফুয়েলের ব্যবহার ও জ্বালানি রূপান্তরের সামাজিক দিক হবে প্রধান আলোচনার বিষয়।
সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সপ্তাহের এক অনুষ্ঠানে রবিবার লা ক্যামেরা বলেন, আসন্ন COP30 সম্মেলনে বায়োফুয়েলের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং টেকসই বায়োমাস ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। সম্মেলনটি আগামী ১০–২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেম শহরে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিভিন্ন দেশ হালনাগাদ জাতীয় জলবায়ু অঙ্গীকার পেশ করবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে।
লা ক্যামেরা জানান, বায়োফুয়েল নিয়ে এমন একটি প্রতিশ্রুতি গৃহীত হতে পারে যা চূড়ান্ত ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত হবে—এর মধ্যে থাকতে পারে ২০৩৫ সালের মধ্যে উৎপাদন চারগুণ বৃদ্ধির লক্ষ্য বা জ্বালানি মিশ্রণে টেকসই বিমান জ্বালানির (SAF) অংশ নির্ধারণ।
তিনি বলেন, “আমার ধারণা, এবার জ্বালানি রূপান্তরের সামাজিক দিক এবং টেকসইভাবে বায়োমাস ব্যবহারের বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে।”
IRENA ইতোমধ্যে সম্মেলনের জন্য একটি বায়োফুয়েল প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)–এর সঙ্গে বায়োফুয়েল উৎপাদন প্রচারে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বলে জানান লা ক্যামেরা। এছাড়াও, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়টি আলোচনায় থাকবে।
লা ক্যামেরা আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্থাপনায় দ্রুত অগ্রগতির কারণে IRENA এখন ২০৩০ সালের লক্ষ্য পূরণে ঘাটতি কিছুটা কমবে বলে আশা করছে। বর্তমানে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা COP28–এ নির্ধারিত ১১.২ টেরাওয়াট লক্ষ্যের চেয়ে ০.৯ টেরাওয়াট কম হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা গত বছরের ১.৪৯ টেরাওয়াট ঘাটতি অনুমান থেকে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।
২০২৩ সালের দুবাই COP28 সম্মেলনে ১০০টিরও বেশি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধির অঙ্গীকার করেছিল। IRENA–এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই লক্ষ্য পূরণে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক গড়ে ১৬.৬% প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিতব্য COP30 সম্মেলন জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় টেকসই বায়োফুয়েল, সামাজিক ন্যায় ও স্থানীয় অংশগ্রহণের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।