1. bulletindhaka9@gmail.com : ঢাকা বুলেটিন : ঢাকা বুলেটিন
  2. info@www.dhakabulletin.news : ঢাকা বুলেটিন :
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিযোগিতার চাপ সামলে বাণিজ্যে ভারসাম্য খুঁজছে দক্ষিণ কোরিয়া  ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ২৬ নিহত, তবুও ট্রাম্প বললেন শান্তিচুক্তি ঝুঁকিতে নেই মনপুরার বিচ্ছিন্ন দুই চরে লঞ্চঘাট পরিদর্শন ও নতুন রাস্তা উদ্বোধন করলেন নৌ-উপদেষ্টা দশমিনায় মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজাসহ চারজন আটক ফরিদপুরে আসামীর হুমকিমূলক বক্তব্যে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১২টি প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ ও জরিমানা ভোলায় তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষানবিশ নির্বাচনে কমিউনিটি আউটরিচ সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালী জেলা আইডিইবি’র ২৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন ডিবি’র জালে ৮১১ পিস ইয়াবাসহ কারবারি গ্রেপ্তার নারিকেল গাছ পরিস্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্টে এক যুবক নিহত

শীতকে সামনে রেখে হাঁস পালনে ব্যস্ত ভোলার মেঘনা পাড়ের যুবক মিজান 

মোঃ সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

গাঙ্গেয় অববাহিকার বুকে জেগে ওঠা দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা। চারদিকে নদী-বেষ্টিত এই জনপদের মানুষের জীবনযাত্রা নদী ও পলিমাটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। এখানকার খাবার, ঐতিহ্য আর উৎসবের সঙ্গে শীতকালে হাঁসের মাংস যেন খাবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেঘনা পাড়ের বেড়িবাঁধের পাশে এক তরুণ গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার।

শীত এলেই ভোলার ঘরে ঘরে হাঁসের মাংস রান্নার ধুম পড়ে যায়। অতিথি আপ্যায়ন হোক বা পিকনিকের আয়োজন—হাঁসের মাংস আর মহিষের টক দই এখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকায় শীর্ষে। এই মৌসুমকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাঁস বিক্রি করে ভালো আয় করছেন বহু খামারি ও তরুণ উদ্যোক্তা। জেলার বাইরে থেকেও আনা হয় হাঁস।

তেমনই এক সফল তরুণ ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের রামদাশপুর গ্রামের বেড়িবাঁধের পাড়ের যুবক মিজান হোসেন। বয়স মাত্র ২৫ বছর। শীত মৌসুমকে সামনে রেখে তিনি খুলনা থেকে একদিন বয়সী খাকি ক্যাম্বেল জাতের এক হাজার হাঁস কিনেছিলেন, প্রতি হাঁস ৩৫ টাকায়। গত আড়াই মাস ধরে তিনি নিয়মিতভাবে বেড়িবাঁধের পাশে খামারে ও নদীতে এসব হাঁসের পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।

মিজান জানান, তাঁর খামারে বর্তমানে এক হাজার হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০ কেজি গম খাওয়াতে হয় হাঁসগুলোকে। ইতোমধ্যে কিছু হাঁস বিক্রিও করেছেন তিনি। বর্তমানে প্রতিটি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা করে। এভাবে বিক্রি করতে পারলে সব খরচ বাদে অন্তত এক লাখ টাকার মতো লাভ হবে বলে আশা করছেন মিজান।

হাঁস পালনের প্রাথমিক পুঁজি সংগ্রহে সহায়তা করেছে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস)–এর ইলিশা শাখা। মিজান এখন পর্যন্ত সংস্থাটি থেকে দুই দফায় ঋণ নিয়েছেন—প্রথমবার ২০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয়বার ৩০ হাজার টাকা।

মিজান বলেন, “স্থানীয় বাজারে হাঁসের চাহিদা সবসময়ই থাকে, বিশেষ করে শীতকালে তা আরও বেড়ে যায়। তাই আসন্ন শীত মৌসুমই আমার মূল লক্ষ্য। ভবিষ্যতে খামারটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে।”

মিজানের সাফল্যের গল্প ইতিমধ্যে তাঁর গ্রামের অন্যান্য তরুণদের মধ্যেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তাঁর দেখাদেখি আশপাশের আরও অনেক যুবক এখন হাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। কেউ কেউ ছোট পরিসরে হাঁস কিনে খামার শুরু করেছেন।

রামদাশপুর গ্রামের তরুণ কমরুল ইসলাম বলেন, “আগে ভাবতাম হাঁস পালন খুব ঝামেলার কাজ। কিন্তু মিজান ভাইকে দেখে বুঝেছি, নিয়ম মেনে করলে এটি বেশ লাভজনক। এখন আমি নিজেও হাঁস খামার দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।”

একই গ্রামের কামাল মাঝি বলেন, “মিজান এখন আমাদের জন্য উদাহরণ। তাঁর মতো আমরা যদি একটু উদ্যোগী হই, তাহলে নিজের পায়ে দাঁড়ানো কঠিন কিছু নয়।”

ভোলা সদর উপজেলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদ বলেন, “ভোলা বিভিন্ন উপজেলায় অনেক যুবক এখন হাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বেকার তরুণদের জন্য এটি একটি লাভজনক বিকল্প পেশা হিসেবে গড়ে উঠছে।”

স্থানীয় পর্যায়ে হাঁস পালন এখন কেবল ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা নয়, বরং তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভাবনাময় আয়ের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট