আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বুধবার একটি পরামর্শমূলক মতামত প্রকাশ করে জানিয়েছে, ইসরায়েলের উপর গাজার বেসামরিক জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং জাতিসংঘের ত্রাণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে, ইসরায়েল এই মতামত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে।
আইসিজে-র ১১ জন বিচারকের প্যানেল জানিয়েছে, দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের দায়িত্ব হলো গাজার স্থানীয় জনগণের মৌলিক চাহিদা, যেমন খাদ্য, পানি, আশ্রয়, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। আদালতের প্রধান বিচারক ইউজি ইওয়াসাওয়া বলেন, “দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের উপর স্থানীয় জনগণের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য সরবরাহসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলকে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা, বিশেষ করে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে হবে।
এই পরামর্শমূলক মতামত, যা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গত ডিসেম্বরে অনুরোধ করেছিল, আইনি ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয় এবং আদালতের কোনো প্রয়োগকারী ক্ষমতা নেই। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই মতামতকে স্বাগত জানিয়ে ইসরায়েলকে তার বাধ্যবাধকতা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তার মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, “এই মতামত গাজার দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।”
ইসরায়েল এই মতামতকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, “ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তার বাধ্যবাধকতা পুরোপুরি পালন করে।” তারা আইসিজে-র সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে। ইসরায়েল গত বছর ইউএনআরডব্লিউএ-কে গাজায় কার্যক্রম পরিচালনা থেকে নিষিদ্ধ করেছিল, দাবি করে যে এর কিছু কর্মী হামাস বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, জাতিসংঘ এখনও ইউএনআরডব্লিউএ-তে হামাসের সম্পৃক্ততার পরিমাণ পুরোপুরি তদন্ত করেনি এবং ইসরায়েল “সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত একটি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবে না।”
এই মতামত শুধু গাজা সংঘাতের ক্ষেত্রেই নয়, জাতিসংঘের কর্মীদের জন্য রাষ্ট্রগুলোর প্রদান করা সুরক্ষার বিষয়টিও স্পষ্ট করেছে, যা অন্যান্য সংঘাতের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।