
পটুয়াখালীর লোহালিয়ায় বিএনপি নেতা মফিজুল মৃধার ওপর সশস্ত্র হামলা ও চার পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে পালপাড়া বাজারে শত শত নারী-পুরুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী মফিজুল মৃধার মা আকলিমা বেগম, বোন সোনিয়া আক্তার, লোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম জুলকার, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম সিকদার, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট বশির মৃধা, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোয়াজ্জেম সিকদার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন খান, ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন মৃধা, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মো. দুলাল সরদার, যুবদল নেতা মো. আরিফ হোসেন ও ছাত্রদল নেতা জুলহাস মোল্লা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সোহাগ মাঝি ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে, পুলিশকেও আহত করেছে। অথচ এখনো তাদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।” তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি—ফাঁসির দাবি জানান।
দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে পালপাড়া বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
গত ৮ অক্টোবর রাতে পালপাড়া বাজারে ধর্ষণসহ একাধিক মামলার আসামি সোহাগ মাঝি ও তার নেতৃত্বে ৩০–৪০ জনের সশস্ত্র দল মফিজুল মৃধার ওপর হামলা চালায়। মফিজুল মৃধা লোহালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ইউনিয়ন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একটি ধর্ষণ মামলার সাক্ষী ছিলেন। হামলাকারীরা রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপুর্যপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থানার এসআই রাসেল মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। এতে এসআই রাসেল মাহমুদ, এএসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমানসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। সন্ত্রাসীরা পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর রাতেই পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। আহত এসআই রাসেল মাহমুদ বাদী হয়ে সোহাগ মাঝিকে ১ নম্বর আসামি করে ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। অপরদিকে, মফিজুল মৃধার মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে সোহাগ মাঝিকে প্রধান আসামি করে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।