
ভোলায় শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫। আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে জেলায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার শিশুকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ভোলা সিভিল সার্জন অফিসের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনিরুল ইসলাম মনির এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “ভোলার সব স্কুলে প্লে থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইপিআই টিকা সেন্টারগুলোতে এই ক্যাম্পেইন চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।”
মোট ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৮ জন শিশুকে একটি করে কার্যকর এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়া হবে—যার মধ্যে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৮ জন স্কুলগামী এবং ২ লাখ ৫০ হাজার ৯২০ জন স্কুলবহির্ভূত শিশু। সকলেই টিকা পাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
সিভিল সার্জন জানান, যেসব শিশুর জন্মনিবন্ধন নেই বা স্কুলে পড়ে না, তাদেরও ম্যানুয়ালি নিবন্ধন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার শিশুর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, “টাইফয়েড সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়। দূষিত পানি, অপরিচ্ছন্ন খাবার এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে এই রোগ ছড়ায়। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর দুই-তৃতীয়াংশের পেছনে টাইফয়েড সরাসরি বা পরোক্ষভাবে দায়ী।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ইতিমধ্যে এই টিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পাকিস্তান, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে সফলভাবে এটি দেওয়া হচ্ছে।
সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে টিকা দেওয়ার স্থানে হালকা লালচে ভাব, ব্যথা বা অল্প জ্বর দেখা দিতে পারে, যা স্বাভাবিক এবং দ্রুত সেরে যায়।
তিনি আরও বলেন, “এই টিকা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়। এটি শুধু টাইফয়েড প্রতিরোধই নয়—অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কমানো এবং শিশুর সুস্বাস্থ্য ও উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও মাইলফলক।”
এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে গ্যাভি (GAVI), ফলে সরকারের কোনো বাড়তি ব্যয় হচ্ছে না।