চীনের সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি সেপ্টেম্বরে মন্দীভূত হয়েছে, যখন ক্যাক্সিন চীনা সেবা পিএমআই সূচক ৫২.৯-এ নেমে এসেছে আগের মাসের ৫৩.০ থেকে। বাড়তি খরচ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষতির মধ্য দিয়ে এই মন্দনা ঘটেছে, যদিও নতুন রপ্তানি অর্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারের সহায়তায়।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত রেটিংডগ চীনা জেনারেল সার্ভিসেস পিএমআই-এর তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বরে সেবা খাতের বৃদ্ধি হালকা মাত্রায় কমেছে। এই সূচকটি ৫০-এর উপরে থাকায় সেবা খাতে প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়, তবে আগস্তের ৫৩.০ থেকে নেমে ৫২.৯-এ পৌঁছেছে। এই পিএমআইটি প্রধানত চীনের পূর্ব উপকূলীয় ছোট-মাঝারি সেবা প্রদানকারী এবং রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ করে, যা সরকারি পিএমআই-এর চেয়ে আরও সূক্ষ্মভাবে অর্থনৈতিক প্রবণতা প্রতিফলিত করে।
নতুন ব্যবসায়িক অর্ডারের প্রবৃদ্ধি আগস্তের তুলনায় সামান্য কমেছে, যা খাতের মোট প্রবৃদ্ধির মন্দনার প্রধান কারণ। ইনপুট খরচ, বিশেষ করে মজুরি এবং কাঁচামালের দাম, আগের মাসের তুলনায় সামান্য দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ফলে, প্রতিষ্ঠানগুলো আগস্তে কমানোর পর সেপ্টেম্বরে তাদের আউটপুট চার্জস বাড়িয়েছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপ, যা গত ১৭ মাসের সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পেয়েছে। এর পেছনে বাড়তি খরচ এবং ক্ষমতা চাপ কমে যাওয়াকে দায়ী করা হয়েছে।
যদিও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে, নতুন রপ্তানি অর্ডার গত সাত মাসের সবচেয়ে দ্রুত হারে বেড়েছে। এর পেছনে পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা চীনের সেবা রপ্তানিকে উত্থান দিয়েছে। এছাড়া, কম্পোজিট আউটপুট ইনডেক্স ৫১.৯ থেকে উন্নীত হয়ে ৫২.৫-এ পৌঁছেছে, যা জুন ২০২৪-এর পর সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধির হার নির্দেশ করে এবং সেবা খাতের অবদানকে তুলে ধরে।
রেটিংডগের প্রতিষ্ঠাতা য়াও য়ু বলেছেন, “স্বল্পমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে, লাভের মার্জিনের চাপ এখনও হেডলাইন পিএমআই পাঠ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। আমরা আশা করছি যে সেবা পিএমআই নিকট ভবিষ্যতে প্রসারিত হবে।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “সেবা খাতের লাভের মার্জিন চাপের মুখে রয়েছে, যদিও এই প্রবণতায় মৌলিক উন্নতি দেখা যায়নি।” ব্যবসায়িক আস্থা মার্চ মাসের পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের উন্নত অবস্থা এবং বিক্রয় বাড়ানোর পরিকল্পনায় আশাবাদী।
এই তথ্য চীনের বৃহত্তর অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ, যা দীর্ঘস্থায়ী সম্পত্তি সংকট, দুর্বল গৃহস্থালি আস্থা এবং নরম বেসরকারি বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে গতি ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। সরকার ভোগ বাড়ানো এবং দাম স্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে, কিন্তু চাহিদার দৃঢ় পুনরুদ্ধার এখনও অধরাই রয়েছে। আগস্তে কারখানার উৎপাদন এবং খুচরা বিক্রয় গত বছরের পর সবচেয়ে দুর্বল লাভ দেখিয়েছে। নীতিনির্ধারকরা অর্থনৈতিক সমর্থন এবং আর্থিক বাজারের অতিউত্তাপের উদ্বেগের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় সতর্কতার সাথে এগোচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেবা খাতের এই মিশ্র সংকেত অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের জন্য সরকারি উদ্দীপনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।