আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নেপালে সাম্প্রতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটির অর্থনৈতিক ও রাজস্ব কাঠামোর জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে ক্রেডিট রেটিংয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ফিচের প্রকাশিত নোটে উল্লেখ করা হয়, বিক্ষোভ, পরিবহন অবরোধ ও বাজার বন্ধের ঘটনায় চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রবৃদ্ধি ০.৮ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৩.৬ শতাংশে নেমে যেতে পারে। এর ফলে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ বিলিয়ন নেপালি রুপি (প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলার) কম হওয়ার আশঙ্কা, ঘাটতি জিডিপির ৬.২ শতাংশে উঠে যেতে পারে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ১০.২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা আগামী ছয় মাসের আমদানি ব্যয়ের সমতুল্য—এই স্তরটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সীমা’ হিসেবে বিবেচনা করে ফিচ। কাঠমান্ডুভিত্তিক এক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইকোনমিক অ্যান্ড পলিসি আউটলুক-এর প্রধান ড. রবিন্দ্র পৌদ্যাল বলেন, “বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে প্রকল্প স্থগিত করছে; যদি স্থিতিশীলতা না ফেরে, আগামী বছর এফডিআই ২০ শতাংশ কমতে পারে।” ফিচ বর্তমানে নেপালের দীর্ঘমেয়াদি ইস্যু ডিফল্ট রেটিং ‘বি’ (নেগেটিভ আউটলুক) রেখেছে; সংস্থাটি জানায়, রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়লে রেটিং আরও এক ধাপ কমে ‘বি-’ যেতে পারে। অপরদিকে, সরকারের এক জ্যেষ্ঠ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের আলোচনা করছি; রেটিং রিভিউ-এর আগেই চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য।” বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংসদে বাজেট পাস বিলম্ব, সরকারি খরচ বন্ধ ও পর্যটন মৌসুমে ভ্রমণ সতর্কতা জারি হলে চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রা আয় আরও ৮-১০ শতাংশ কমতে পারে।