গোল্ডম্যান স্যাকস, সিটি গ্রুপ, ব্ল্যাকরকসহ বড় ছয় যুক্তরাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যে নতুন করে ১.৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ও চার হাজারের বেশি চাকরি সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শুক্রবার ঘোষিত এই পদক্ষেপটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোমবারের লন্ডন সফরের ঠিক আগে এল, বড় বড় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো আটলান্টিক-পাড়ের সম্পর্ক জোরদারের বার্তা দিচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস লন্ডনের সিটি-তে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, গোল্ডম্যান স্যাকস ২০২৬ সালের মধ্যে নতুন উত্তর লন্ডন কার্যালয়ে ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ও দেড় হাজার উচ্চ-দক্ষ কর্মী নিয়োগ করবে; সিটি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলার দিয়ে গ্লাসগোতে প্রযুক্তি হাব সম্প্রসারণ করবে; ব্ল্যাকরক ৩৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়ে এডিনবরা ও ম্যানচেস্টারে দুটি ডেটা সেন্টার গড়ে তুলবে। এছাড়া জেপি মরগ্যান, মর্গ্যান স্ট্যানলি ও ব্যাংক অফ আমেরিকা মিলে অতিরিক্ত ৭৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ ও ১,৬০০ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী রিভস বলেন, “এই বিনিয়োগগুলো ব্রিটিশ অর্থনীতিতে আস্থার ভোট; এটি প্রমাণ করে, ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুগেও যুক্তরাজ্য বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে টিকে আছে।” তিনি আরও জানান, সরকার কর্পোরেট কর হার ২৫% থেকে কমিয়ে ২২% করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে এবং সিটি রেগুলেটরকে “দ্রুত অনুমোদন” প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে নতুন কর্মসংস্থান দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।
বিনিয়োগ ঘোষণার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সোমবারের লন্ডন সফরের কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়িক নেতারা বলছেন, এটি “সময়োচিত” পদক্ষেপ। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে দাবি করেন, “আমার প্রশাসনে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিদেশে বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী ছিল; এই নতুন প্রতিশ্রুতি আমাদের শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতিফলন।” যুক্তরাজ্যে তার কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এর অর্থনীতি অধ্যাপক ড. লুসি ওয়েইন বলেন, “বিনিয়োগের অঙ্ক বড়, তবে এর পেছনে রাজনৈতিক বার্তাও গুরুত্বপূর্ণ—ব্যবসায়িক সম্প্রদায় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র ‘বিশেষ সম্পর্ক’ এখনো অটুট বলে প্রমাণ দিতে চায়।” তবে বিরোধী কনজারভেটিভ দলের ছায়া অর্থমন্ত্রী মেল স্ট্রাইড সমালোচনা করেন, “বিনিয়োগ স্বাগত, কিন্তু সরকার নিজস্ব প্রবৃদ্ধি কৌশলের অভাবে বিদেশি প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করছে।”