বিশ্বব্যাপী চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে ছাপিয়ে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় এশিয়ার শেয়ারবাজার চাঙ্গা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই ফেডারেল রিজার্ভ এই সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিতে পারে এমন আশাবাদ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে। এর ফলে শেয়ারবাজারের সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এক মিশ্র বার্তা দিচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫), এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখা গেছে। এই উত্থানের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা। সাধারণত, সুদের হার কমানো হলে বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পায়, যা ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী সপ্তাহে এমন একটি নীতি শিথিলতার ইঙ্গিত দিতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন উদ্দীপনা যোগ করবে। এই প্রত্যাশা শেয়ারবাজারকে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অন্যান্য নেতিবাচক সংবাদ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমানে, বৈশ্বিক অর্থনীতি একাধিক রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিভিন্ন অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। তবে, এই পরিস্থিতিতেও ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য পদক্ষেপের গুরুত্ব এত বেশি যে তা সব ধরনের রাজনৈতিক উদ্বেগকে ছাপিয়ে গেছে। বাজারের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক ঝুঁকির চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন, কারণ এটি সরাসরি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্পোরেট মুনাফাকে প্রভাবিত করে।
বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর যেকোনো সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত দেবে। এটি শুধু এশিয়া নয়, বরং ইউরোপ ও আমেরিকার শেয়ারবাজারকেও প্রভাবিত করবে। তবে, তারা সতর্ক করে বলেন যে ফেডারেল রিজার্ভের পক্ষ থেকে সুদের হার কমানোর বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি কতটা স্থায়ী হবে, তা বলা কঠিন।
বিনিয়োগকারীদের এখন প্রধান আগ্রহের বিষয় হলো ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী বৈঠক এবং সেখানে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেদিকে। তাদের সিদ্ধান্তই আগামী দিনে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারের গতিপথ নির্ধারণ করবে।