
ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নে এক রাতে তিনটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য লুট করে নিয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটে ২৯ অক্টোবর (বুধবার) রাতে সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের মধ্য বাপ্তা গ্রামের ২নং ওয়ার্ডে। তিনটি বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী সামছুন্নাহার ভোলা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন অসুস্থতার কারণে ঢাকায় ছিলেন। এ সময় তার মেয়ে ফারিহা ও শাশুড়ি মমতাজ বেগম বাড়িতে ছিলেন। রাতের কোনো এক সময় ডাকাত দল রান্নাঘরের টিনের চাল খুলে ঘরে প্রবেশ করে লুকিয়ে থাকে। পরে মমতাজ বেগম টয়লেটে যাওয়ার জন্য দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মুখোশধারী এক ডাকাত হাতে দা নিয়ে তাকে চুপ থাকতে হুমকি দেয়।
চিৎকার দিলে ফারিহাও জেগে ওঠেন, কিন্তু ডাকাতরা দা উঁচিয়ে “চুপ না থাকলে কোপ দিব” বলে ভয় দেখায়। পরে তারা ঘরের লোকজনকে জিম্মি করে ফারিহার গলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, কানের দুল এবং আলমিরা থেকে আরও ২ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। এছাড়া তারা ঘরের অন্যান্য আসবাব ও খাদ্যপণ্যও নিয়ে যায়—যার মধ্যে ছিল তেল, চাল ও মসুর ডাল।
একই রাতে পাশের দুই বাড়িতেও ডাকাতরা হামলা চালায়। নুরজাহান বেগম নামে এক গৃহবধূ জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা মা-মেয়েকে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। তার নাকফুল ও ৬ আনা ওজনের কানের দুলসহ প্রায় ৭০ হাজার টাকার গহনা ছিনিয়ে নেয় তারা।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন বলেন,
“আমি ঢাকায় চিকিৎসার জন্য ছিলাম। সেই সুযোগে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ঘরে ঢুকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে। এতে আমাদের অন্তত আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“আমাদের ধারণা, স্থানীয় কিছু মাদকাসক্তই এ ঘটনায় জড়িত। তারা এলাকায় নিয়মিত ঘোরাফেরা করে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, দ্রুত তাদের ধরুন।”
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে এলাকায় মাদকাসক্তদের আনাগোনা বেড়েছে। তারা চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িত।
ভোলা সদর থানার এএসআই মো. নাজির হোসেন বলেন,
“বাপ্তা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে একই রাতে তিনটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত চলছে। স্থানীয় মাদকাসক্ত ও সন্দেহভাজনদের দমনে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”