
৩১ দিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অচলাবস্থায় দেশজুড়ে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) জানিয়েছে, দেশের ৩০টি ব্যস্ততম বিমানবন্দরের প্রায় অর্ধেকেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে শুক্রবার হাজারো ফ্লাইট বিলম্বিত বা বাতিল হয়েছে।
FAA-এর তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩৫টি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ও বিমানবন্দর—যার মধ্যে নিউ ইয়র্ক, অস্টিন, নিউয়ার্ক, ফিনিক্স, ওয়াশিংটন, ন্যাশভিল, ডালাস ও ডেনভার অন্তর্ভুক্ত—শুক্রবার গুরুতর কর্মীস্বল্পতার মুখে পড়ে। নিউ ইয়র্ক অঞ্চলে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ ছিল, যেখানে ৮০ শতাংশ ট্রাফিক কন্ট্রোলার কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল: সারা দেশে ৫,৬০০টির বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত এবং অন্তত ৫০০টি বাতিল হয়েছে। নিউ ইয়র্কের লা গার্ডিয়া বিমানবন্দরে ৫০ শতাংশ ফ্লাইট বিলম্বিত ও ১২ শতাংশ বাতিল হয়; গড় বিলম্বের সময় ছিল প্রায় ১৪০ মিনিট। ওয়াশিংটনের রিগ্যান ন্যাশনাল বিমানবন্দরে এক-চতুর্থাংশ ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
FAA জানায়, প্রায় ১৩,০০০ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও ৫০,০০০ টিএসএ (Transportation Security Administration) কর্মকর্তা বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, “৩১ দিন ধরে বেতন না পাওয়ায় কন্ট্রোলাররা তীব্র মানসিক চাপ ও ক্লান্তিতে ভুগছেন। এই পরিস্থিতির অবসান না ঘটলে বিমান চলাচল আরও বিপর্যস্ত হবে।”
শুক্রবারের বিলম্ব তুলনামূলকভাবে সীমিত ছিল কারণ হ্যালোইন উপলক্ষে সন্ধ্যার ট্রাফিক সাধারণের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম ছিল। তবুও পরিস্থিতি সপ্তাহান্তে আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পরিবহন সচিব শন ডাফি।
এর আগের দিন, অরল্যান্ডো, ডালাস/ফোর্ট ওয়ার্থ এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে একই কারণে ৭,৩০০টি ফ্লাইট বিলম্বিত ও ১,২৫০টি বাতিল হয়েছিল।
ডেল্টা, ইউনাইটেড, সাউথওয়েস্ট ও আমেরিকান এয়ারলাইনসসহ প্রধান এয়ারলাইনগুলো কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছে দ্রুত একটি “continuing resolution” বা অন্তর্বর্তী অর্থায়ন বিল পাস করতে, যাতে সরকারি কার্যক্রম পুনরায় চালু করা যায়। ন্যাশনাল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিক ড্যানিয়েলসও একই আহ্বান জানান।
অচলাবস্থা শুরু হয়েছিল ১ অক্টোবর, যখন কংগ্রেসে ফেডারেল বাজেট বিল আটকে যায়। রিপাবলিকানরা শর্তহীন অর্থায়নের পক্ষে থাকলেও ডেমোক্র্যাটরা বছরশেষে মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাওয়া স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি বাড়ানো নিয়ে আলোচনা দাবি করছে।
FAA সতর্ক করেছে, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে ২০১৯ সালের ৩৫ দিনের অচলাবস্থার মতোই দেশব্যাপী বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হতে পারে।