
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে গাজা থেকে শেষ জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দিয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজায় এখন আর কোনো জীবিত জিম্মি নেই—অবশিষ্ট সবাই মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
জেরুজালেম, ১৮ অক্টোবর (রয়টার্স): ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী সোমবার হামাস তাদের হেফাজতে থাকা শেষ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে অপহৃত।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ২৪ বছর বয়সী এভিয়াতার ডেভিড—যাকে আগস্টে প্রকাশিত এক ভিডিওতে কঙ্কালসার অবস্থায় নিজের “কবর খোঁড়া” অবস্থায় দেখা গিয়েছিল। এছাড়া রয়েছেন পিয়ানোবাদক আলন ওহেল (২৪) এবং আভিনাতান অর (৩২)। অর–এর অপহরণের দৃশ্য ও তার প্রেমিকা নোয়া আরগামানির জীবনভিক্ষার ভিডিও বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। আরগামানিকে জুন মাসে ইসরায়েলি বাহিনী উদ্ধার করেছিল, এবং অরের মুক্তির পর তাদের পুনর্মিলন ঘটে।
গাজার সীমান্তবর্তী কিবুতজ এলাকাগুলো থেকে অপহৃত সাতজনের মধ্যেও কয়েকজন এখন মুক্ত। তাদের মধ্যে আছেন যমজ গালি ও জিভ বারম্যান (২৮), ভাই আরিয়েল কুনিও (২৮) ও ডেভিড কুনিও (৩৫)। ডেভিডের স্ত্রী শ্যারন ও তাদের দুই কন্যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি পেয়েছিলেন।
দুইজন সৈন্য—মাতান আংগ্রেস্ট (২২) ও নিমরড কোহেন (২০)—যারা গত বছরের ৭ অক্টোবরের যুদ্ধে হামাসের হাতে বন্দি হয়েছিলেন, তারাও সোমবার মুক্তি পান।
এছাড়া গাজায় এখনো নিখোঁজ ১৮ জনের মধ্যে তিনজন বিদেশি নাগরিক—একজন তানজানিয়ান শিক্ষার্থী ও দুইজন থাই শ্রমিক—যাদের সবাইকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। নেপালের শিক্ষার্থী বিপিন জোশির মরদেহ সোমবার হামাস ইসরায়েলের হাতে তুলে দেয়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজায় আর কোনো জীবিত জিম্মি নেই। ফরেনসিক প্রমাণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অবশিষ্ট সবাইকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন ২০১৪ সালের ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধে নিহত ইসরায়েলি সেনাও রয়েছেন। বাকিরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় বন্দি হওয়া ২৫১ জনের অংশ ছিলেন—যাদের কেউ অপহরণের সময়ই নিহত হন, কেউ হামাসের হাতে বা ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারান।
হামাস জানিয়েছে, কিছু মরদেহ উদ্ধারে সময় লাগবে, কারণ সব কবরস্থান ও দাফনের স্থান শনাক্ত করা যায়নি। এই উদ্দেশ্যে একটি আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স কাজ করছে, যাতে নিখোঁজদের মরদেহ শনাক্ত করে ফেরত আনা যায়।