
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন গিউ-বেক জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিন ও সাবমেরিন-ভিত্তিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (SLBM) উন্নয়নে রাশিয়া সম্ভবত “বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা” দিচ্ছে। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা কমিটির শুনানিতে তিনি বলেন, এই সহযোগিতা উভয় দেশের গত দুই বছরের ক্রমবর্ধমান সামরিক সম্পর্কেরই অংশ।
সংসদে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী আন স্পষ্ট করেন, পিয়ংইয়ং এখনও পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন থেকে SLBM ছোড়ার কৌশল “সম্পূর্ণরূপে দখল করেছে” কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন তৈরির পাশাপাশি পানির নিচ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা বিশ্লেষণ বলছে, এই অগ্রগতির পেছনে রাশিয়ার “বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা” লক্ষণীয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, উত্তর কোরিয়া সাবমেরিন নির্মাণে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রযুক্তি পাচ্ছে। তবে এখনই বলা সমীচীন নয় যে তারা সফলভাবে সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে।”
২০২৩ সালের পর থেকে মস্কো-পিয়ংইয়ং সামরিক সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (NIS) মতে, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে সেনা পাঠানোর বিনিময়ে অর্থনৈতিক সুবিধা ও উচ্চ প্রযুক্তি পাচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি উত্তর কোরীয় সেনা আপাতত রাশিয়ার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে সিউল-ওয়াশিংটন-টোকিও ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও রাশিয়ার সহায়তার বিষয়টি “গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি” হিসেবে আলোচিত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা মস্কোর সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক চ্যানেলে এই ইস্যু তুলেছি এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন হলে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছি।”
উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সহায়তার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। পিয়ংইয়ং-এর রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA) শনিবার এক বিবৃতিতে বলে, “আমাদের সামরিক শক্তি সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে গড়ে উঠেছে, কোনো বহিরাগত সহায়তা নেই।” তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক চালিত সাবমেরিন প্রকল্পে রাশিয়ার পারমাণবিক প্রপালশন অভিজ্ঞতা ছাড়া এগোনো কঠিন।