বৃহস্পতিবার এশীয় ও ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে ব্রেন্ট ক্রুড ও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ফিউচার্স তৃতীয় কার্যদিবস ধরে দর হারায়, যেহেতু বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করছেন আজকের ওপেক+ বৈঠকে উৎপাদন বাড়ানো হবে কি না তা জানার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচা তেল মজুদ গত সপ্তাহে বেড়ে গেলেও সরবরাহ-উদ্বেগ কিছুটা প্রশমিত হলেও দরপতনের মূল চালিকা এখন সংগঠনটির সম্ভাব্য আউটপুট বৃদ্ধির আভাস।
ব্রেন্ট ক্রুড অক্টোবর ডেলিভারি ০.৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭৭.১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই একই হারে পতনে ৭৩.৪ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।
তিন দিনের টানা পতনে ব্রেন্ট প্রায় ৩.২ শতাংশ ও ডব্লিউটিআই ৩.৭ শতাংশ কমেছে।
ভিয়েনায় সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ওপেক+ জয়েন্ট মিনিস্টেরিয়াল মনিটরিং কমিটি (JMMC) সভায় সৌদি আরব, রাশিয়া ও অন্যান্য প্রধান উৎপাদকরা চতুর্থ-ত্রৈমাসিকে আউটপুট কাটবে, বাড়াবে না কিংবা বর্তমান ৫.৮ মিলিয়ন ব্যারেল/দিন স্বেচ্ছা কমানোর মেয়াদ আরও এক মাস বাড়াবে—এই তিন সিদ্ধান্তের যেকোনো একটি নিতে পারে। সৌদি-নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি ২০২২ সাল থেকে “প্রিভেন্টিভ কাট” রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু উচ্চ সুদের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি চাহিদা শিথিল হওয়ায় উৎপাদন খুলে দেওয়ার চাপ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA) জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দেশটির কাঁচা তেল মজুদ ৩.৬ মিলিয়ন ব্যারেল বেড়ে ৪২৪.২ মিলিয়ন ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে—চার মাসের সর্বোচ্চ। অন্যদিকে লিবিয়ার শারারা ক্ষেত্র পুনরায় চালু এবং ইরানের রপ্তানি কিছুটা বাড়ায় সরবরাহ ঘাটতির শঙ্কা কমেছে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণসাগরে পাইপলাইন বন্ধ থাকায় ইউরোপীয় রিফাইনারিগুলো এখনও বিকল্প সরবরাহ খুঁজছে।
ANZ রিসার্চ-এর বিশ্লেষকরা বলছেন, “বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষমান অবস্থান নিয়েছে; ব্রেন্ট ৭৫-৮০ ডলারের মধ্যে স্থির থাকতে পারে যদি ওপেক+ উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সীমিত পরিমাণে হয়।” অন্যদিকে গোল্ডম্যান স্যাকস সতর্ক করেছে, চীনের চাহিদা পুনরুদ্ধার না হলে চতুর্থ-ত্রৈমাসিকে দাম ৭০ ডলারের নিচে নামতে পারে।
JMMC সভার সিদ্ধান্ত শনিবার ভোরে প্রকাশ করা হবে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, উৎপাদন কাটা হলে ব্রেন্ট ৮০ ডলার ছুঁতে পারে; অন্যথায় ৭৫ ডলারের নিচে পতনের ঝুঁকি থাকবে।