ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার অভিযোগ করে, জাতিসংঘের (জেএন) সহায়তা সংস্থাগুলো গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং সংস্থাটির দেওয়া আইনি অভেদ্যতা যেন এই কার্যক্রম ঢাকার ঢাল না হয়। একইসঙ্গে তারা জরুরি সহায়তা কার্যক্রমের কঠোর তদারকি দাবি করেছে। জাতিসংঘ এখন পর্যন্ত অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
শনিবার থেকে সানা ও হুদায়দায় বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে অন্তত ১১ জন জাতিসংঘ কর্মী আটক করেছে হুতি বাহিনী। এর আগে ২০২১ সাল থেকে আরও ২৩ জন জাতিসংঘ কর্মী বন্দী রয়েছেন; তাদের একজন চলতি বছর হেফাজতে মারাও গেছেন।
হুতি-পরিচালিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ইয়েমেন সরকার আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে গুপ্তচর সেলের বিরুদ্ধে, অথচ জাতিসংঘ এতে নিন্দা জানিয়েছে; অথচ ইসরায়েলি হামলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় নীরব রয়েছে”। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “১৯৪৬ সালের জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের অভেদ্যতা কনভেনশন মেনে চলা হবে, তবে এই অভেদ্যতা গুপ্তচরবৃত্তি বা অপরাধমূলক কার্যক্রমকে আড়াল করতে পারে না।”
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রবিবার এক বিবৃতিতে আটককৃতদের “অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে” মুক্তির দাবি জানান এবং “জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্যতা রক্ষা করার” আহ্বান জানান। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বুধবার বলেন, “সানায় ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি-এর কার্যালয় এখনও হুতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে; আমরা সবার নিরাপত্তা ও সম্পত্তির অবিচ্ছেদ্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমান হামলায় হুতি-নিয়ন্ত্রিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর হুতি বাহিনী নিরাপত্তা কড়াকড়ি বাড়িয়েছে। স্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, এই অভিযোগ ও আটক অভিযান মূলত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওপর হুতিদের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করার অংশ।