নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর না করায় প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে পরিষদের বিচার কক্ষে প্রবেশ করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেদম মারধর করে আটক করা হয়। মামুনুর রশীদ আরও অভিযোগ করেন, তাকে এখনও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এবং তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
এই ঘটনার পর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মিঠাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন ও প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা জানান, স্থানীয় ছাত্র ও জনগণ চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ সময় বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে হামলার ঘটনাটি ঘটে। একই সঙ্গে আরও কয়েকজন সদস্যকেও জোরপূর্বক অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর করানো হয়েছে।
এদিকে, আরেক অবরুদ্ধ সদস্য মোসা: শাহানাজ বেগম মুঠোফোনে জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা রাজ্জাকসহ তিনজন ছাত্র জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করে এবং তাকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানান।
তবে, বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, “সাধারণ ছাত্র-জনতা চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছে, আমি সহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কোনো ধরনের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। ফিরোজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।”
ঘটনার বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, “অভিযোগ হাতে পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুব হাসান বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবো। এছাড়া আমার হাতে করণীয় কিছুই নেই।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।