বাংলাদেশের জিনবিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর অভাবনীয় এক আবিষ্কার দেশের কৃষিজগতে নতুন যুগ সূচনা করতে পারে। তিনি এমন একটি নতুন জাতের ধানগাছ উদ্ভাবন করেছেন যা একবার রোপণে বছরে পাঁচবার ফলন দেবে।
বিশিষ্ট এই জিনবিজ্ঞানী তাঁর উদ্ভাবিত ধানগাছটির নাম দিয়েছেন ‘পঞ্চব্রীহি’ – যার অর্থ হলো ‘পাঁচটি ধান’। এই অসাধারণ ধানগাছ থেকে এক বছরে পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে ধান পাওয়া যাবে। বোরো আবাদে একবার, আউশ আবাদে দুইবার এবং আমন আবাদে আরও দুইবার – মোট পাঁচবার ফলন দেবে এই বিস্ময়কর ধানগাছ।
বহু বছরের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই জিনবিজ্ঞানী ‘পঞ্চব্রীহি’ উদ্ভাবন করেছেন। তিনি জানান, রাসায়নিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং জনেটিক রিকম্বাইনেশন এর মাধ্যমে তিনি এই নতুন জাত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। উচ্চ ফলনশীল এবং খরাপ আবহাওয়ায়ও জীবিত থাকার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ধানগাছের চাষ বিস্তার করলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
জিনবিজ্ঞানীর এই অভাবনীয় উদ্ভাবনকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন কৃষিবিদ ও গবেষক। তাঁরা মনে করেন, ‘পঞ্চব্রীহি’ চাষ বিস্তৃত হলে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে এটি শস্য বৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে পরিবেশগত প্রভাব এবং চাষাবাদ পদ্ধতি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, এই নতুন ধানজাতের সুফল পাওয়া গেলে তা বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানিও সম্ভব হবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রীর কৃষিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশাররাফ হোসেন। খাদ্য উদ্বৃত্ত বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর বিদেশী মুদ্রা অর্জন করা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সর্বোপরি, জিনবিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর এই আবিষ্কার বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।