“মৌলভীবাজারে আসামিকে জামিনের প্রলোভনে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার”
জামিনে মুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ফারুক আহমদ (৪৯) নামে ১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বড়লেখা উপজেলার মুড়াউল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত ফারুক’কে গ্রেপ্তার করে।
কুলাউড়ার নজরুল ইসলাম নামের ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, প্রতারক চক্র তাঁর ভাইকে জামিনে বের করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিলেও তা আর ফেরত দেয়নি।
ভুক্তভোগী অভিযোগ, তাঁর ভাই রুহুল আমিন একাধিক মামলায় আসামি হয়ে কারাবন্দি ছিলেন। এ সুযোগে বড়লেখার পানিধারা এলাকার ফারুক আহমদ নামের প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেকে পরিচয়ে দাবি করেন, তিনি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জামিন করাতে পারবেন।
নজরুল ইসলামের ভাষ্যমতে, চলতি বছরের ১৭ই মার্চ কুলাউড়া পৌরসভার নূরজাহান রেস্টুরেন্টে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ফারুক আহমদের সঙ্গে একটি চুক্তিনামা হয়। শর্তসাপেক্ষে উল্লেখ করা হয়, চুক্তির তিন দিনের মধ্যে জামিন না হলে আড়াই লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। এর ভিত্তিতে পূবালী ব্যাংকের একটি একাউন্টে টাকা জমা দেওয়া হয়।
তবে টাকা নেওয়ার পরও জামিনের কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় ভুক্তভোগী ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং হুমকি দেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একইভাবে ফারুক আহমদ ওই ভুক্তভোগীর পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ মোট প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
বাদি জানান, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হওয়ায় বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম বলেন, “টাকার বিনিময়ে জামিন করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা গুরুতর অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য, এছাড়া পুলিশ ও বিচারবিভাগ নিয়েও সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে চরমভাবে ভঙ্গ করে কেউ যদি আইন বা আদালতের প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে টাকা নিয়ে জামিনের আশ্বাস দেয়, তা সরাসরি প্রতারণা এবং ফৌজদারি অপরাধের শামিল। এই ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, আমি সবাইকে আহ্বান জানাই কোনো ব্যক্তি জামিন, মামলা, পুলিশি সহায়তা বা আদালত সংক্রান্ত বিষয়ে টাকার বিনিময়ে ‘ব্যবস্থা করে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিলে সতর্ক থাকুন। এ ধরনের প্রতারক চক্র সম্পর্কে আমাদের তথ্য দিন। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সবসময় আইনের সঠিক প্রয়োগ ও জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।”