পটুয়াখালীর বাউফলে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রমে ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক হতদরিদ্র নারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সময় রাব্বি নামের এক দালালকে হাতেনাতে ধরেন সাংবাদিকরা। ঘটনার পর অফিসের কর্মকর্তাদের সহায়তায় তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।
২০২২ সালে শৌলা মৌজায় ডিজিটাল জরিপ শুরুর পর থেকেই প্রতিটি ধাপে ঘুষ দাবির অভিযোগ আসছে। ভুক্তভোগীরা জানান, অফিসারদের সামনেই দালালদের হাতে টাকা তুলে দিতে হচ্ছে। নগদ অর্থ পরিবর্তন হতে দেখেও কর্মকর্তারা নীরভ থাকেন।
অভিযুক্ত দালাল রাব্বি দাবি করেন, তিনি “ভূমি জরিপ ট্রেনিং” করেছেন। তবে তার অফিসে উপস্থিতির কারণ বা কাগজপত্রের উৎস স্পষ্ট করতে পারেননি। অফিস সহকারী রেজাউল করিম বলেন, “রাব্বির হাতে কাগজ কীভাবে এলো, আমি জানি না।” সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আব্দুস সালাম দাবি করেন, অভিযোগ ওঠা মৌজা তার অধীনে নয়। উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার আতিউর রহমান জানান, “রাব্বি আমার দপ্তরের বদনাম করেছে, ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই—জেলা কর্মকর্তাকে জানাব।”
জেলা সেটেলমেন্ট অফিসার নুসরাত জাহান খান মুঠোফোনে বলেন, “অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, শুধু রাব্বি নন—আরও ৪-৫ জন সক্রিয় দালাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করে। তারা জমিদাতাদের ভুল তথ্য দিয়ে জমির সীমানা পরিবর্তন, ভূমির শ্রেণি বদল ও অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। অভিযোগ রয়েছে, দালালদের সংগ্রহীত অর্থের একটি অংশ সরাসরি কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে।
সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে জমিদাতারা এখন “ডিজিটাল জরিপ” নয়—‘দুর্ভোগ-ভোগান্তি ও হয়রানির আরেক নাম’ বলে অভিহিত করছেন এই প্রকল্পকে।