
চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই দায়িত্ব নিলেন তাইওয়ানের নতুন বিরোধী নেত্রী চেং লি-উন। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি সতর্ক করেছেন, তাইওয়ান প্রণালীতে যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে এবং দ্বীপটির নিরাপত্তা ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—তার দল চীনের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার নতুন যুগের সূচনা করবে।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী তাইপেতে দলীয় সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্যে কুওমিনতাং (KMT)–এর নতুন চেয়ারপারসন চেং লি-উন বলেন, “এটা এক কঠিন সময়। তাইওয়ান প্রণালীতে যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে, সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাইওয়ানের নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে।”
চীনের সঙ্গে ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পক্ষপাতী কেএমটি। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (DPP) চীনের সার্বভৌমত্ব দাবি স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
৫৫ বছর বয়সী চেং লি-উন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তার নেতৃত্বে দলটি আগের চেয়েও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বেইজিংয়ের সঙ্গে। তার পূর্বসূরি এরিক চু তুলনামূলকভাবে আন্তর্জাতিকমুখী ছিলেন এবং ২০২১ সালে চেয়ারম্যান হওয়ার পর কোনো সময় চীন সফর করেননি।
চেংয়ের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্রুত অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দুই পক্ষের “পুনর্মিলন” এগিয়ে নিতে হবে। চীনা সামাজিক মাধ্যমে কিছু ব্যবহারকারী চেংকে “পুনর্মিলনের দেবী” বলে আখ্যা দিয়েছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ নানা নামে ডাকে, ভুল হলে হেসে উড়িয়ে দিন।”
দলীয় নতুন উপপ্রধান হসিয়াও সু-চেন ইতিমধ্যেই চীন সফর করেছেন এবং সেখানকার তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান সং তাওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
তবে চেং তার প্রথম ভাষণে চীন নীতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা জানাননি কিংবা চীন সফরের ইঙ্গিতও দেননি। শুধু বলেছেন, “কেএমটি হবে সেই দল, যারা তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তির নতুন যুগের সূচনা করবে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি—যা প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের প্রশাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থনপুষ্ট—তার দল এর বিরোধিতা করে যাবে।
যদিও কেএমটি গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে, দলটি এবং তাদের সহযোগী তাইওয়ান পিপলস পার্টি মিলে এখনো সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ধরে রেখেছে। ফলে সরকার দলীয় বাজেট ও আইন পাসে নিয়মিত বাধার মুখে পড়ছে।
চেংয়ের প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ হবে আগামী বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় ও মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচনগুলো মূলত অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে কেন্দ্রিত হলেও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।