পটুয়াখালীর বাউফলে জমি বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পলাতক প্রধান আসামি গোবিন্দ ঘরামীকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-৮ (সিপিসি-১, পটুয়াখালী) ও র্যাব-১ (সিপিএসসি, গাজীপুর) যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৩৫ বছর বয়সী গোবিন্দ ঘরামীকে শ্রীপুর থানাধীন মৌলাইদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তিনি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার গোসিংগা গ্রামের বাসিন্দা এবং রঙ্গেশ্বর ঘরামীর পুত্র।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ২১ মার্চ সকালে জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে গোবিন্দসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তারা এলোপাতাড়ি কোপালে শাহ আলম রাঢ়ী (৪০) গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ মার্চ তার মৃত্যু হলে মামলায় ৩০২ ধারা যুক্ত হয়।
নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বাউফল থানায় ২৩ মার্চ মামলা করেন, যার নম্বর ২২/২০২৫। মামলায় মোট আটজনকে আসামি করা হয়। গোবিন্দ ঘরামী ছিলেন প্রধান আসামি এবং গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি পলাতক ছিলেন।
র্যাব-৮-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, গ্রেফতারের পর গোবিন্দকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। তাকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়। এর আগেও থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের হলেও বিষয়টি সমঝোতার পথে না গিয়ে চূড়ান্ত সহিংসতায় গড়ায়। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সক্রিয় হয়।
এদিকে, নিহতের পরিবার গ্রেফতারকে ন্যায়বিচারের পথে প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছে। তারা দাবি করেছেন, বাকি আসামিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আবদুল হালিম বলেন, “জমি নিয়ে ছোটখাটো ঝামেলা মাঝে মধ্যে হতো, কিন্তু এভাবে প্রাণহানি কেউ আশা করেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় এলাকাবাসী কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।”