মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর মার্কিন ডলার এবং দীর্ঘমেয়াদী ট্রেজারি বন্ডের দাম হ্রাস পেয়েছে, যা ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মার্কিন মুদ্রানীতির অনিশ্চয়তার মধ্যে সোনার দাম দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট ২০২৫) এশিয়ার প্রাথমিক বাজারে মার্কিন ডলার ইউরোর বিপরীতে ০.৩% কমে ৯৮.১৮৭-এ নেমে এসেছে, যা ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার ঘোষণার পর ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের প্রতিফলন। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন যে কুক মিশিগান এবং জর্জিয়ায় মর্টগেজ জালিয়াতির সাথে জড়িত ছিলেন, যদিও তিনি এই অভিযোগের বিস্তারিত প্রমাণ দেননি। এই পদক্ষেপ ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলের উপর ট্রাম্পের পূর্ববর্তী আক্রমণের ধারাবাহিকতা, যিনি ফেডের সুদের হার নীতির সমালোচনা করে আসছেন।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেজারি বন্ডের দামও পতনের মুখে পড়েছে, ফলস্বরূপ ৩০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের ইল্ড ৪.৯৯২% থেকে সামান্য বেড়ে ৫.০৩৭%-এ পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। এই পতন মূলত ট্রাম্পের “ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট” এবং মুডি’স কর্তৃক মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং হ্রাসের কারণে জাতীয় ঋণের বোঝা বৃদ্ধির উদ্বেগের সাথে সম্পর্কিত।
এদিকে, সোনার দাম বাজারের অনিশ্চয়তার মধ্যে বেড়ে ১% উত্থানের সাথে প্রতি আউন্স ৩,২৩৪.৩৪ ডলারে পৌঁছেছে, যা দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলার-ভিত্তিক সম্পদের অবমূল্যায়নের ভয়ে সোনার মজুদ বাড়াচ্ছে, যা এই মূল্যবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের ফেডের উপর চাপ এবং তার নীতিগত অনিশ্চয়তা, যেমন ট্যারিফ বৃদ্ধি এবং ঋণ-বৃদ্ধিকারী বিল, ডলারের উপর দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করছে। মরগান স্ট্যানলি রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ ডলার আরও ১০% দুর্বল হতে পারে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো আমদানি-নির্ভর দেশের জন্য মিশ্র ফলাফল বয়ে আনতে পারে। দুর্বল ডলার মৎস্য ও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সুবিধা দিলেও, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে