পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) লোন কেলেঙ্কারিতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই অভিযানে প্রাথমিকভাবে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনশন সেলের উপপরিচালক মো. রাজিব মিয়া এবং ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট আবু সালেহ মো. ইছা দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া জমা স্লিপ তৈরি করে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর লোনের কিস্তির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অডিট সেলের নজরে আসার পর বাধ্য হয়ে তারা মাত্র ৩২ লাখ টাকা ফেরত দেন, তবে বাকি বিপুল অর্থ এখনও উধাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযানের খবরে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শুধু লোন কেলেঙ্কারি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, প্রশ্নফাঁস, ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরি, অবৈধ নিয়োগ-বাণিজ্য ও প্রকৌশল বিভাগের অনিয়মসহ নানা দুর্নীতি চলছে। তারা দাবি জানান, এসব অনিয়মও দুদকের তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে প্রকৌশলী ইউনুস শরীফ (নিগ্রো ইউনুস) এবং অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের বিশেষ কর্মকর্তা ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, ভুয়া সনদ, ক্লাস না নেওয়া ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১০ আগস্ট গণমাধ্যমে লোন কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশের পরই দুদক এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। তবে শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা—যদি অভিযান কেবল লোক দেখানো হয় এবং মূল হোতারা রক্ষা পেয়ে যায়, তাহলে পবিপ্রবির দুর্নীতির চক্র অটুটই থেকে যাবে।