ভোলায় বাস ডিপোতে সিএনজি রাখাকে কেন্দ্র করে বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলেও বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে তা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হলেও বিকেল পর্যন্ত উত্তেজনা অব্যাহত আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। রাতের সংঘর্ষের পর বুধবার সকালে বাস শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা শহরের মোস্তফা কামাল বাসটার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে এবং কয়েকটি সিএনজিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর জেরে সিএনজি শ্রমিকরাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যার ফলে সংঘর্ষ আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
বুধবার সকাল থেকে বাস মালিক ও শ্রমিক সমিতির ডাকা ধর্মঘট চলমান আছে , যার ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে, অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্তত ১০টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে এবং ৭-৮টি সিএনজিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া, দুটি বাস সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান।
সহকারী পুলিশ সুপার রিপন কুমার জানান, উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা চলছে এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় বাস ও সিএনজি শ্রমিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে। বাস মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, সিএনজি চালকরা নিয়ম না মেনে বাস ডিপোতে গাড়ি রাখছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে বিরোধের কারণ হয়ে আসছিল। অন্যদিকে, সিএনজি শ্রমিকদের দাবি, বাস শ্রমিকরা তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।
সংঘর্ষের কারণে শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হলেও দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে যাতে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা যায়। তবে যাত্রীরা দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার ও যান চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।