বাংলাদেশের গণমাধ্যম শিল্প গত দুই দশকে নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা এবং সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলন থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি, গণমাধ্যমের সামনে নতুন করে নানা চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছে।
প্রায় ১৭ বছরের ব্যবধানে এই দুই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপকে নাড়া দিয়েছে। তবে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উভয় ক্ষেত্রেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই দুই ঘটনা থেকে গণমাধ্যম অনেক কিছু শিখতে পারে।
সিনিয়র সাংবাদিকরা বলছেন , “২০০৭ সালে আমরা দেখেছি কীভাবে চাপের মুখে অনেক মিডিয়া হাউস বন্ধ হয়ে গেছে। আবার ২০২৪ সালে দেখলাম কীভাবে গণমাধ্যম আক্রমণের শিকার হলো। এসব ঘটনা আমাদের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করেছে।”
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন মনে করেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে ঐতিহ্যবাহী মিডিয়াকে নিজেদের ভূমিকা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
তবে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগও রয়েছে। মিডিয়া ব্যবসায়ীদের অনেকেই মনে করেন, “ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। আমরা যদি এগুলোকে কাজে লাগাতে পারি, তবে আমাদের পাঠক-দর্শকদের কাছে আরও কার্যকরভাবে পৌঁছাতে পারব।”
সরকারি কর্মকর্তারাও গণমাধ্যমের গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, জানান, “আমরা চাই গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করুক। তবে তাদেরকেও দায়িত্বশীল হতে হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম শিল্পকে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। তবে সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই চ্যালেঞ্জগুলো সুযোগে পরিণত হতে পারে। নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং নতুন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার – এই তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিলে গণমাধ্যম আবারও জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।