ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) বার্ষিক ফোরামে এ বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা, মন্দার শঙ্কা এবং নীতিনির্ধারকদের সামনে থাকা গভীর অনিশ্চয়তা। পর্তুগালের সুনামধন্য শহর সিনত্রায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকাররা বৈশ্বিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও নীতিকৌশল নিয়ে মুখোমুখি হন।
ECB প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দ বলেন, “বর্তমানে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ এমন এক সময়ে হচ্ছে যেখানে অনিশ্চয়তা প্রায় সর্বব্যাপী।” তিনি সতর্ক করেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার পথে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠছে।
ফোরামে বক্তারা বিশেষভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্য নীতির কারণে। জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য বিরোধ এবং সম্ভাব্য নতুন শুল্ক আরোপের আশঙ্কা আন্তর্জাতিক বাজারে অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অনিশ্চয়তা শুধু ইউরোপ নয়, পুরো বিশ্ব অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করছে। বিনিয়োগ, সুদের হার, এবং মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইউরোপে মুদ্রাস্ফীতির হার এখনো লক্ষ্য মাত্রার উপরে থাকায় ECB সুদের হার কমানোর ক্ষেত্রে সতর্ক। তবে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় মন্দার ঝুঁকিও মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই দ্বৈত চাপে ECB কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নানা দিক বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে।
সিনত্রার এই ফোরাম ভবিষ্যৎ নীতির রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ এবং স্পষ্ট দিকনির্দেশনা ছাড়া বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে।