রুশ জ্বালানি আমদানির বিষয়ে জাপান নিজের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে—এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োজি মুতো। তিনি বলেন, জাপান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জি৭ অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রেখে কাজ চালিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োজি মুতো বলেন, “রুশ জ্বালানি আমদানির বিষয়ে আমরা জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব, একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখব।”
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, তিনি জাপানের অর্থমন্ত্রী কাটসুনোবু কাতোকে বলেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসন চায় জাপান যেন রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মাসের শেষ দিকে এশিয়া সফরে আসছেন বলেও জানা গেছে।
রাশিয়ার ২০২২ সালের ইউক্রেন আগ্রাসনের পর জি৭ দেশগুলো রুশ তেল আমদানি ধীরে ধীরে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জাপান এখনো সাখালিন–২ প্রকল্প থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি অব্যাহত রেখেছে, যা দেশটির জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাখালিন-২ থেকে প্রাপ্ত গ্যাস জাপানের মোট এলএনজি আমদানির প্রায় ৯% জোগান দেয়।
মন্ত্রী মুতো বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জাপান ধারাবাহিকভাবে রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আসছে।” তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেননি।
তিনি আরও বলেন, “সাখালিন-২ থেকে পাওয়া এলএনজি জাপানের বিদ্যুৎ নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে—এটি আমাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৩% সরবরাহ করে।” একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাপান জি৭সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় অব্যাহত রাখবে।
এদিকে, বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চাপের কারণে ডিসেম্বর থেকে ভারতের রুশ তেল আমদানিও সীমিত হতে পারে, যার ফলে চীন তুলনামূলক সস্তায় সরবরাহ পাবে। তবে জাপান শিগগিরই সাখালিন এলএনজি আমদানি বন্ধ করবে—এমন সম্ভাবনা এখনই নেই।
ওয়াশিংটন চীন, ভারত ও জাপানের ওপর বাণিজ্য আলোচনার মাধ্যমে রুশ তেল ও গ্যাস আমদানি কমানোর চাপ বাড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য চীন ও ভারতের কিছু কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, রাশিয়া এই জ্বালানি আয় ব্যবহার করছে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে।