আগামী ১০ অক্টোবর ঘোষণা হবে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীর নাম। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে জল্পনা—কিন্তু কারা মনোনীত হন, কোন প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত হয় এই সম্মানজনক সিদ্ধান্ত?
নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির ৫ সদস্যের বোর্ড প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাওয়া মনোনয়নসমূহ পর্যালোচনা শুরু করেন। যোগ্য মনোনয়নকারীর তালিকায় থাকেন জাতীয় সংসদ সদস্য, সাবেক পুরস্কারজয়ী, কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারক—মোট প্রায় ৩০০০ জন। এর মাধ্যমে আসা প্রস্তাবগুলো যাচাই করে নোবেল ইনস্টিটিউটের গবেষণা দল; পরে কমিটি সংক্ষিপ্ত তালিকা (শর্টলিস্ট) প্রস্তুত করে।
গ্রীষ্মকালে বিশেষজ্ঞ পরামর্শক ও ইতিহাসবিদদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট দেন। নোবেলের উইল অনুযায়ী, পুরস্কার দেওয়া হয় ‘যিনি বা যারা গত বছরগুলোতে জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্ম ও আদর্শের সীমানা অতিক্রম করে সৌহার্দ্য, নিরস্ত্রীকরণ ও শান্তি সম্মেলনের ক্ষেত্রে সর্বাধিক কার্যকর অবদান রেখেছেন’। অর্থাৎ শুধু মানবিক কাজ নয়, সুনির্দিষ্ট শান্তি-উদ্যোগ ও টেকসই প্রভাবকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।
চলতি বছর ৩৪১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে—এর মধ্যে ২৩৭ জন ব্যক্তি ও ১০৪টি সংগঠন। নামগুলো গোপন রাখা হলেও ধারণা করা হচ্ছে, জলবায়ু অভিবাসন, ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি এবং মহিলা-অধিকার কর্মীদের মধ্যে কেউ স্থান পেতে পারেন। নরওয়েজীয় নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টিয়ান হেমিল্ডাল বলেন, “বিচার-বিশ্লেষণে আমরা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, বাস্তব প্রাপ্তি ও নৈতিক নির্ভরযোগ্যতার সমন্বয় দেখি।”
অতীতে ১৯৭৩ সালে হেনরি কিসিঞ্জার-লে ডুক থো’র মতো বিতর্কিত নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিটি এখন আরও কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। ফল ঘোষণার পর ১০ ডিসেম্বর—আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে অসলো টাউন হলে পুরস্কার হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় এই শান্তির উৎসব।