ইউক্রেনের ধারাবাহিক ড্রোন হামলায় রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর ফলে ডিজেল ও তেলের রপ্তানি কমে গেছে, যা একদিকে মস্কোর আয়ের বড় উৎসে আঘাত হেনেছে, অন্যদিকে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। পরিস্থিতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রচেষ্টাকেও জটিল করে তুলতে পারে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেন রাশিয়ার রিফাইনারি, পাইপলাইন ও রপ্তানি টার্মিনালে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। বুধবার সালাভাত ও কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর নভোরোসিস্কে দ্বিতীয়বারের মতো বড় আঘাত হানা হয়। এতে রাশিয়ার জ্বালানি শিল্পে বড় ধাক্কা লাগে, যা দেশটির মোট জিডিপির এক-চতুর্থাংশ।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক ডিজেল রপ্তানিতে আংশিক নিষেধাজ্ঞা এবং গ্যাসোলিন রপ্তানিতে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বছরের শেষ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্লেষণ সংস্থা কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে রাশিয়া দৈনিক প্রায় ৮ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল ডিজেল রপ্তানি করেছিল, যা বৈশ্বিক সমুদ্রপথে ডিজেল বাণিজ্যের ১২%।
এই ঘোষণার পর বৈশ্বিক ডিজেল বাজারে দামের তীব্র উত্থান ঘটে। ইউরোপীয় রিফাইনারদের লাভের হার ৮% বেড়ে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এর পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। যুক্তরাষ্ট্রেও ডিজেল ও হিটিং অয়েল মজুত গত সপ্তাহে ১০ বছরের গড়ের তুলনায় ১১% কম ছিল।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ইউক্রেনের সফল হামলা পশ্চিমা দেশগুলোর সূক্ষ্মভাবে সাজানো রাশিয়া-সম্পর্কিত জ্বালানি নিষেধাজ্ঞার কৌশলকেও বিপাকে ফেলছে। কারণ এতদিন লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার আয়ের ওপর চাপ তৈরি করা, তবে বৈশ্বিক সরবরাহে বড় ধরনের ধাক্কা না দেওয়া।
শঙ্কা তৈরি হয়েছে, ক্রেমলিন এ অবস্থায় আরও আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, যা যুদ্ধবিরতি আলোচনার পথে বড় অন্তরায় হবে।