ব্যাংক অব জাপান (বোজে) নীতিহার অপরিবর্তিত রেখে ইটিএফ ও রিট বিক্রির পথে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকীকরণের সূচনা করায় বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে; বিনিয়োগকারীরা বিষয়টিকে সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, যা ইয়েন ও শেয়ারবাজারে স্বল্পমেয়াদি ওঠানামার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
শুক্রবারের বৈঠকে বোজে ওভারনাইট কল রেট ০.২৫ শতাংশেই রাখে এবং ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সূচকভিত্তিক ইটিএফ ও রিট হোল্ডিংস বিপরীতে পুনর্গঠনের (কান্টি-বাই-কান্টি বিক্রি) সিদ্ধান্ত জানায়। টোকিওর এক বৃহৎ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের পোর্টফোলিও প্রধান হিরোশি সুজুকি বলেন, “হার বাড়ানো হয়নি—এতে শর্ট-টার্মে নিক্কেই ২২০০-২২৫০ স্তরে সাপোর্ট পাবে; তবে ইটিএফ ধারাবাহিকভাবে বিক্রি হলে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রাইস-টু-আর্নিংস রেশিও ১৫-এ নিচে নামতে পারে।” বাজারে বর্তমানে বোজে-র হাতে ইটিএফ ৭০ ট্রিলিয়ন ইয়েন ও রিট ১.৬ ট্রিলিয়ন ইয়েন—যা ধাপে ধাপে বিক্রির লক্ষ্য। বিনিয়োগ ব্যাংক নোমুরা ধারণা করছে, বছরে ১০-১২ ট্রিলিয়ন ইয়েন বিক্রি হলে ২০২৭ সালের মধ্যে সেন্ট্রাল ব্যাংকের ইকুইটি হোল্ডিংস অর্ধেকে নেমে আসবে। মুদ্রা বাজারে প্রতিক্রিয়া স্বল্পমেয়াদি: ডলার-বিরুদ্ধে ইয়েন ১৪১.৮ থেকে ১৪০.৪-এ শক্ত হয়, পরে আবার ১৪১-এ ফিরে যায়। সিঙ্গাপুরভিত্তিক হেজ ফান্ড ম্যানেজার ক্লেয়ার লিম বলেন, “বোজে যে ‘পরীক্ষামূলক’ পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ইয়েনকে ১৩৮-১৩৯ স্তরে টেনে নিতে পারে—যদি ফেড আবারও ছাড় দেয়।” সরকারি বন্ড বাজারে ১০-বছরের ইয়েল্ড ০.৯২ শতাংশে উঠে আসে, যা গত দুই মাসের সর্বোচ্চ; ব্যাংক ও বীমা খাতের শেয়ার ১.২-১.৮ শতাংশ বেড়েছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছে ইন্টারেস্ট মার্জিন আস্তে আস্তে প্রসারিত হবে। তবে প্রযুক্তি ও গ্রোথ স্টকে লাভ-সংক্রান্ত উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, কারণ ইটিএফ বিক্রির ফলে তরলতা কিছুটা কমতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বোজে-র পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করবে মূল্যস্ফীতির গতি ও জাপানের বার্ষিক বেতন-বৃদ্ধির (শুন্টো) ফলাফলের ওপর; আগামী ডিসেম্বরে হার বাড়ানোর সম্ভাবনা এখনও ৪৫ শতাংশ হিসেবে বাজারে দেখা হচ্ছে।