ভোলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (৫ টাকা কেজি) চালের বস্তা নির্ধারিত ৩০ কেজি ৫০০ গ্রামের জায়গায় গড়ে ১ কেজি করে কম পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওজন ঘাটতির কারণে ডিলাররা চাল গ্রহণ করতে না পারায় সদরসহ তজুমদ্দিনসহ পুরো জেলায় বিতরণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। খাদ্য গুদাম, অটো রাইস মিল ও ডিলার—তিন পক্ষের মধ্যে দায়-দায়িত্ব নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ভোলা অটো রাইস মিলের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, সরকারি গুদাম থেকে মিলে চাল যাবে; সেখানে ১ % হারে পুষ্টি মিশিয়ে ৩০ কেজি চাল + ৩০০ গ্রাম পুষ্টি + ২০০ গ্রাম বস্তা = ৩০ কেজি ৫০০ গ্রাম করে বস্তা ডিলারদের হস্তান্তর করতে হবে।
তজুমদ্দিন উপজেলার ১৬ জন ডিলারের মাধ্যমে ৭ হাজার ২৯৬ জন সুবিধাভোগী চাল পান। বৃহস্পতিবার মলংচড়া ইউনিয়নের ডিলার বিল্লাল জানান, “৫০ কেজি ৭০০ গ্রামের বস্তাতেও ওজন কম ছিল। সঠিক ওজন না পাওয়ায় চাল গ্রহণ করিনি।” একই অভিযোগ জেলার প্রায় ৮০ হাজার সুবিধাভোগীর মধ্যে বড় একটি অংশের কাছে। গণনায় দেখা গেছে, প্রতি বিলে বস্তা প্রতি গড়ে ১ কেজি ঘাটতি হলে পুরো জেলায় প্রায় ৮০ টন চাল কম যেতে পারে।
ডিলাররা বলছেন, ওজন কম থাকায় তারা বিতরণ করতে পারছেন না।ভোলা অটো রাইস মিলের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন দাবি করেন, “আমাদের দুই ধরনের বস্তা আছে; অসাধু ডিলারদের ষড়যন্ত্রে বদনাম হচ্ছে।”উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল মালেক জানান, “গুদাম থেকে মিলার সঠিক ওজনে চাল বুঝে নেবেন, পুষ্টি করণের পর ডিলারদের দেবেন—এই নিয়ম। বিষয়টি নিয়ে মিলার ও ডিলারদের সঙ্গে বসা হয়েছে।”জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক বলেন, “সকল উপজেলাকে মিল পরিদর্শন ও ওজন নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে সাধারণ সুবিধাভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ওজনে কম দিলে মিলারের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙের কারণে কালোতালিকাভুক্তি ও জরিমানার বিধান রয়েছে। ইতিমধ্যে তজুমদ্দিন উপজেলায় বিতরণ স্থগিত রেখে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সচেতন মহল বলছে, যদি ওজন ঘাটতি ও দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে চাল না পেয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির লক্ষ্য ভেস্তে যেতে পারে এবং ভোলার প্রায় ৮০ হাজার দরিদ্র পরিবার ক্ষতির মুখে পড়বে।