দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভোলার মেঘনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এতে জেলে পাড়ায় নেমে এসেছে উৎসবের আমেজ। ইলিশের সরবরাহ বাড়তে থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে, পাইকার ও আড়ৎদাররা।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুটা মোটেও ভালো কাটেনি। ইলিশের সংকটে পড়তে হয়েছিল চরম আর্থিক দুরবস্থায়। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে জালে ভরে ফিরছে ইলিশ, ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা।
ভোলা সদরের তুলাতলী আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটে জমে উঠেছে ইলিশের কেনাবেচা। কেউ ওজন দিচ্ছেন, কেউ বরফ দিচ্ছেন আবার কেউ ঝুড়িতে মাছ সাজাচ্ছেন। এসব ইলিশ চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা ও বরিশালের বিভিন্ন আড়তে।
জেলে বশির, মোশারফ ও সোহেল জানান, আগে সারাদিন পরিশ্রম করে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মাছ পাওয়া যেত। এখন প্রতিবার মাছ শিকারে গিয়ে ৮-৯ হাজার টাকার ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এতে তাদের মুখে ফিরেছে হাসি।
একইভাবে জেলে শাহে আলম ও আবুল হোসেন বলেন, “এভাবে ইলিশ ধরা অব্যাহত থাকলে অভিযানের আগেই আগের ধার-দেনা পরিশোধ করা সম্ভব হবে।”
ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় সন্তুষ্ট আড়ৎদাররাও। তুলাতলী আড়ৎদার মঞ্জু জানান, “মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না থাকলেও এখন প্রচুর মাছ আসছে। এতে জেলেরা খুশি, আমরাও খুশি।” কয়েকজন আড়ৎদার জানান, আগে প্রতিদিন গড়ে এক লাখ টাকার ইলিশ কেনাবেচা হতো, এখন তা বেড়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় পৌঁছেছে।
বাজারে সরবরাহ বাড়ায় ইলিশের দামও কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন ভোক্তারা।
এদিকে মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশ ধরা পড়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ভূইয়া বলেন, “এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। জেলেদের জালে যেহেতু ইলিশ ধরা পড়ছে, আমরা আশাবাদী এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।”