স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে রবিবার থেকে চার দিনের উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনা শুরু করেছেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও চীনার ভাইস প্রিমিয়ার হে লিফেং। ট্যারিফ, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও টিকটক বিক্রির চূড়ান্ত সময়সীমা—এই তিন ইস্যুতে উত্তেজনা কমাতে দুই পক্ষই আপাতত ‘সম্ভাব্য ছোট ছোট সমঝোতা’র পথ খোঁজার কথা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানায়, আলোচনার মূল এজেন্ডায় রয়েছে—
১. নভেম্বরে ফিরে আসতে পারা তিন অঙ্কের পাল্টা ট্যারিফ এড়ানো,
২. চীনা পণ্যে ওয়াশিংটনের একতরফা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, এবং
৩. ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাইটড্যান্সের টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি না হলে অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অধিকার রাখে; আমরা ওয়াশিংটনকে খোলা, নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলেছি”[^২০^]। পিপলস ডেইলি-তে প্রকাশিত মন্তব্যে আরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, “চীনা প্রতিষ্ঠানের বৈধ স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে তিন দফা ৭৫ দিনের সময়সীমা বাড়িয়ে টিকটক বিক্রির সময় ১৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছে। মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “বেইজিং অনুমোদন না দিলে টিকটক ‘অচিরেই’ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে”। বাজার বিশ্লেষকেরা জানান, চীন যদি শেষ মুহূর্তে রপ্তানি-নিয়ন্ত্রণ তালিকায় টিকটকের অ্যালগরিদম অন্তর্ভুক্ত করে, যেকোনো বিক্রয়ই আইনগতভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
ট্যারিফ ফ্রন্টে অবশ্য কিছু অগ্রগতি আছে। জেনেভা বৈঠকের পর দুই দেশ ৯১% অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করেছিল; ওয়াশিংটন ২৪% ‘পাল্টা ট্যারিফ’ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে, যার মেয়াদ নভেম্বরে শেষ হচ্ছে। মাদ্রিদে এবার সেই স্থগিতাদেশ দীর্ঘায়িত করাই মূল লক্ষ্য বলে ট্রেজারি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্প্যানিশ সরকার বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার দুই প্রতিনিধি দল যৌথ সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।