পটুয়াখালী-১ আসনের উদ্যোগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার (২৬ জুলাই, ২০২৫) পটুয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে একটি ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, “কুরআনের আলো সংসদে বাস্তবায়ন করতে আমাদের প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাতে হবে। এজন্য আজ থেকে কেন্দ্র ভিত্তিক পুরুষ ও মহিলা ভোটার, কর্মী ও সমর্থকদের মাঠে কাজ করতে হবে। কুরআনের আইন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।”
সভাপতিত্ব: পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নাজমুল আহসান।
সঞ্চালনা: জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম আল কায়ছারী।
বিশেষ অতিথি:
মুজিবুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, কুরআনের আইন সংসদে প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতের প্রতিনিধিদের সংসদে প্রেরণ করতে হবে। তিনি ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক প্রচারণা এবং জনগণের মধ্যে ইসলামী আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “যতদিন চাঁদাবাজি, হত্যা, সন্ত্রাস, সুদ, ঘুষ, ও দখলবাজি বন্ধ না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।” তিনি এসব সমস্যা দূরীকরণে কুরআনের আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের মতো ‘দিনের ভোট রাতের ভোট’ আর দেখতে চাই না। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সবার জন্য ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”
প্রধান অতিথি মুজিবুর রহমান সন্ধ্যায় একই স্থানে জামায়াতের সহযোগী শিক্ষক সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক হাজার হাজার নারী ও পুরুষ ভোটার, কর্মী এবং সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। মুজিবুর রহমানের এই বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে দলটির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, যেখানে তারা আসন্ন নির্বাচনের জন্য ভোটারদের সম্পৃক্ত করতে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সুষ্ঠ নির্বাচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবি দীর্ঘদিনের। মুজিবুর রহমানের বক্তব্যে সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে ইসলামী সমাধানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা জনগণের একাংশের মধ্যে আবেদন সৃষ্টি করতে পারে।
ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক প্রতিনিধি সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াত তাদের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার পাশাপাশি ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। এটি আগামী নির্বাচনে তাদের প্রভাব বিস্তারের কৌশলের অংশ।
পটুয়াখালী-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর এই প্রতিনিধি সম্মেলন তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা—বিশেষ করে কুরআনের আইন বাস্তবায়ন এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবি—জনগণের সামনে তুলে ধরার একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। মুজিবুর রহমানের বক্তব্যে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ পেয়েছে। তবে, এই বক্তব্য এবং দলের কার্যক্রম বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা ভবিষ্যৎ নির্বাচন ও জনমতের উপর নির্ভর করবে।