জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর ২০২০ সালে ওয়াশিংটনে জাতিগত ন্যায়বিচার প্রতিবাদের সময় উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসার ছবিতে ধরা পড়া একদল এফবিআই এজেন্টকে সংস্থা বরখাস্ত করেছে, যা সাম্প্রতিককালীন নিযুক্ত এফবিআই প্রধানের নেতৃত্বাধীন সরকারি পদক্ষেপের অংশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এফবিআই ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ১৫ থেকে ২২ জনের মধ্যে বিশেষ এজেন্টকে বরখাস্ত করে, যারা ২০২০ সালে মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পর জাতিগত ন্যায়বিচারের দাবিতে সারা দেশে সংঘটিত প্রতিবাদের সময় ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রতিবাদকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসার ছবিতে ধরা পড়েছিলেন। এই বরখাস্তের সঠিক কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করলেও, এটি এফবিআই-এর অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফলাফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই পদক্ষেপটি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত মার্কিন সেনেট কর্তৃক নিশ্চিতকৃত বর্তমান এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেলের নেতৃত্বে ঘটেছে, যিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত। প্যাটেলের নিযুক্তির পর থেকে এফবিআই-এ বেশ কয়েকটি বরখাস্ত ঘটেছে, যা সংস্থার অভ্যন্তরীণ সংস্কারের অংশ বলে বর্ণিত হয়েছে। তবে, এই বরখাস্তগুলোর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগও উঠেছে।
এফবিআই এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এই বরখাস্তগুলোকে “অবৈধ” আখ্যা করে কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আজকের এই অবৈধ বরখাস্তকে এফবিআই এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন কঠোরভাবে নিন্দা করে, যাতে একাধিক এফবিআই স্পেশাল এজেন্টকে লক্ষ্য করা হয়েছে।” এছাড়া, সাবেক এফবিআই কর্মকর্তাদের একটি মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে “অনুগততার অভাব” দেখিয়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক অভিযান চালানো হয়েছে। সেই মামলায় সাবেক অ্যাকটিং ডিরেক্টর ব্রায়ান ড্রিসকলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “এফবিআই প্রেসিডেন্টকে জেলে পুরার চেষ্টা করেছিল এবং তিনি তা ভুলেননি।”
২০২০ সালের প্রতিবাদগুলো জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে জাতিগত বৈষম্য ও পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপিত হয়। ওয়াশিংটনে এই প্রতিবাদের সময় ক্রাউড কন্ট্রোলের জন্য পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে, বিশেষ করে হোয়াইট হাউসের কাছাকাছি প্রতিবাদকারীদের অপসারণের জন্য, যাতে ট্রাম্প একটি স্থানীয় গির্জায় বাইবেল হাতে ছবি তোলেন। এই প্রেক্ষাপটে এজেন্টদের হাঁটু গেড়ে বসা উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের একটি প্রচেষ্টা ছিল, যা পরবর্তীতে তদন্তের কারণ হয়ে ওঠে।
এই ঘটনা এফবিআই-এর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার নীতি এবং রাজনৈতিক প্রভাবের মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে বিতর্ক জাগিয়েছে, যা সংস্থার স্বাধীনতা ও কর্মীদের অধিকারের প্রশ্ন তুলেছে।