থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্ণভিরাকুল ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন আমানতকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণপ্রবাহ সহজ করে অর্থনীতিতে তরলতা (liquidity) বাড়ায়; ফলে দেশের সাম্প্রতিক আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে।
রবিবার ব্যাংককে থাই ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (TBA) এক অনুষ্ঠানে অনুতিন বলেন, “বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ ঋণখেলাপি বাড়ার প্রেক্ষাপটে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে, তবে সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনশীল খাতে ঋণ প্রবাহ বাধাহীন রাখতে হবে।” তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি ‘স্পেশাল লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান (SME) ১.৫ শতাংশ সুদে ১৮০-দিনের মেয়াদি ঋণ পেতে পারে।
থাইল্যান্ডের অর্থনীতি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখায়, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে নিম্ন। পর্যটন সেক্টর পুনরুদ্ধার সত্ত্বেও রপ্তানি চীনের মন্দা ও বৈশ্বিক সরবরাহ-সংকটে চাপে পড়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো ঝুঁকি এড়াতে ঋণ অনুমোদন কঠোর করে তুলেছে, যা ব্যক্তিগত ভোগ ও বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর সেইথাপুৎ সুচান্দন গত সপ্তাহে সুদের হার ২.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখেন এবং ব্যাংকগুলোকে ‘কাউন্টার-সাইক্লিক্যাল বাফার’ ব্যবহার করে ঋণ প্রবাহ চালু রাখার পরামর্শ দেন। তবে ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, জুলাইয়ে নিট ঋণ প্রবাহ বছর-ব-বছর ৩.২ শতাংশ কমে গেছে—যা ২০১৯-এর পর সর্বনিম্ন।
থাই ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পায়ং সানিচান জানান, “আমরা সরকারের সঙ্গে সহায়তা করতে প্রস্তুত; তবে ঋণখেলাপির হার ৩.৪ শতাংশে উঠলে পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।” সংগঠনটি আগামী এক মাসের মধ্যে SME-ঋণের জন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করবে বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনুতিন সরকার ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার করে জনসমর্থন বাড়াতে চায়। থাই রত্ন ও কৃষি রপ্তানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় ভোগ চাঙ্গা করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
উপসংহারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ব্যাংকিং খাত স্বাস্থ্যবান থাকলেই অর্থনীতি গতি পায়; আমরা চাই না, সতর্কতার নামে উৎপাদনশীল খাত অর্থাভাবে থমকে যায়।”