অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রিচার্ড মার্লস নিশ্চিত করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার হেন্ডারসন শিপইয়ার্ডে পারমাণবিক সাবমেরিন রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনঃসরবরাহ সুবিধায় নিয়মিত প্রবেশাধিকার পাবে। শুক্রবার ঘোষিত এই সিদ্ধান্ত অকাস (AUKUS) নিরাপত্তা জোটের আওতায় ত্রিদেশীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।
পার্লামেন্টে দেওয়া বিবৃতিতে মার্লস বলেন, “২০২৭ সালের মধ্যে হেন্ডারসন সুবিধাটি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া-শ্রেণির পারমাণবিক সাবমেরিনগুলোর জন্য প্রস্তুত করা হবে; এতে মিত্র বাহিনীর অপারেশনাল নমনীয়তা বাড়বে এবং প্রশান্ত মহাসাগর-ভারত মহাসাগর অঞ্চলে প্রস্তুতি জোরদার হবে।” স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, প্রাথমিকভাবে ৮০০ মার্কিন নৌ-সেনা ও প্রকৌশলী স্থায়ীভাবে মার্কিন ঘাঁটিতে কর্মরত থাকবেন; অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে সাবমেরিনের পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর রিফুয়েলিং ও মেরামত কাজ পরিচালনা করবেন।
অকাস জোটের আওতায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ২০৩০ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন বহর স্থানান্তরের কথা রয়েছে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার রজার কুক জানান, রাজ্য সরকার ১.২ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার বিনিয়োগ করে সুবিধাটি প্রসারিত করছে, যেখানে স্থানীয় প্রায় ৩ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, “এই পদক্ষেপ অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র প্রসারের পথ সুগম করছে এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে” । বেইজিং আগে থেকেই অকাসকে ‘শীতল যুদ্ধ-মনোভাবাপন্ন’ বলে সমালোচনা করে আসছে। জাপানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ড. ইউকা কানো মনে করেন, “হেন্ডারসন সুবিধা এখন অস্ট্রেলিয়ার জন্য পারমাণবিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে; চীনের বিরুদ্ধে মিত্রদের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা আরও গভীর হলো।”
অস্ট্রেলীয় বিরোধী দলের প্রতিরক্ষা মুখপাত্র অ্যান্ড্রু হাসটি সমালোচনা করেন, “সরকার স্বচ্ছতার অভাব দেখিয়েছে—পার্লামেন্টে পূর্ণ আলোচনা ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে” । তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রেড ইউনিয়নগুলো কর্মসংস্থানের সম্ভাবনায় উৎসাহিত; অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম ইউনিয়নের সেক্রেটারি অ্যাডাম নোবল বলেন, “উচ্চ দক্ষতার কাজের জন্য প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়বে, তবে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।”