পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় এক ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় পটুয়াখালীর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। রোববার সকালে বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে শত শত মানুষ অংশ নেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তার প্রি-টেস্ট পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় গত ৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষার সময় প্রধান শিক্ষক কাজী হারুন অর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক অমল চন্দ্র সাহা তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় অপমানিত হয়ে তামান্না বাড়ি ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন এবং শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ আছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার সকাল ১০টায় শ্রীরামপুর মৌকরন বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধনে অংশ নেন শত শত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। তারা প্রধান শিক্ষক কাজী হারুন অর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক অমল চন্দ্র সাহার অপসারণের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বক্তারা জানান, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, “ঘটনার দিন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক অমল চন্দ্র সাহা পরীক্ষার হলে ছিলেন। তবে শিক্ষার্থী তামান্নার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে আমি জানি না। শুনেছি, সে বর্তমানে বরিশালে চিকিৎসা নিচ্ছে।”
বিদ্যালয়ের সভাপতি খলিলুর রহমান আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করতে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীর প্রতি এমন আচরণ অমানবিক এবং তা বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে।