টোকিও ও ক্যানবেরা বৃহস্পতিবার যৌথ ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বেড়ে ওঠা নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ—বিশেষ করে বিদেশে আটকেপড়া নাগরিক উদ্ধার—মোকাবিলায় তারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পরস্পরের সহযোগিতা আরও গভীর করবে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লস টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)” নামের নতুন কাঠামোর আওতায় দুই দেশ বিপদে পড়া নাগরিক সমন্বিতভাবে সরিয়ে আনা, সমুদ্রে নজরদারি ও সাইবার নিরাপত্তা খাতে তথ্য বিনিময় করবে। কিশিদা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-চীন কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অঞ্চলকে অস্থির করে তুলছে; আমাদের জোটনির্ভর নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা অপরিহার্য।”
অস্ট্রেলিয়া আগামী দুই বছরে জাপানের সাথে যৌথ সামরিক মহড়ার সংখ্যা ১৫-এর জায়গায় ২৫-এ উন্নীত করবে এবং রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির পারমাবার্ট-শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ দু’টি সামনের মাসে জাপানের সাগরে নিয়মিত টহলে যোগ দেবে। টোকিওও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান এফ-৩৫ বহরের জন্য পার্টস ও প্রযুক্তি সহায়তা বাড়াবে।
২০২৩ সালের সুদান সংকটে দু’দেশই নিজ নিজ নাগরিক সরাতে বিমান পাঠিয়েছিল। নতুন পরিকল্পনায় তারা একে অপরের বিমান-জাহাজে আসন বরাদ্দ, ভিসা-জরুরি ছাড়পত্র এবং যৌথ কমান্ড সেন্টার গঠন করবে, যাতে ভবিষ্যতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত দুই হাজার নাগরিক সরিয়ে আনা যায়।
অস্ট্রেলিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্লস বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে সহযোগিতা চাই, তবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতেই এই জোট।” বিশ্লেষকদের মতে, কোয়াড ও অকাস-এর বাইরে জাপান-অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ইন্দো-প্যাসিফিকে বহুস্তর নিরাপত্তা জাল গড়ে তুলছে, যা চীনের বিরুদ্ধে সরাসরি নয়, বরং নিয়ম-ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা রক্ষার প্রয়াস।
দুই পক্ষ আগামী নভেম্বরে সিডনিতে অনুষ্ঠেয় দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী-পর্যায়ের বৈঠকে সহযোগিতার রোডম্যাপ চূড়ান্ত করবে। ২০২৬ সালের শুরুতে টোকিওতে যৌথ সামরিক মহড়ার সময় নাগরিক উদ্ধার অনুশীলনও পরীক্ষা করা হবে।