ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া (বিআই) ঘোষণা করেছে, ভার-ভাগ চুক্তির (burden-sharing deal) আওতায় সরকারের বিআই-তে রাখা তহবিলের ওপর পরিশোধিত সুদের হার বাড়ানো হবে। এ পদক্ষেপ রুপির স্থিতিশীলতা জোরদার করার পাশাপাশি সরকারের আর্থিক চাপ কমাতে সহায়তা করবে। বিশ্লেষকরা এটিকে অর্থনৈতিক নীতি ও মুদ্রানীতির ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পেরি ওয়ারজিও বৃহস্পতিবার জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে সরকারি আমানতের ওপর বিদ্যমান ৪.৫ শতাংশ সুদহার ৫.৭৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। তিনি বলেন, “এই সমন্বয় রাষ্ট্রীয় তহবিলের আয় বাড়াবে এবং বাজারে রুপির প্রতি আস্থা শক্ত করবে, যা দ্রব্যমূল্য চাপ সামলাতে সহায়ক হবে।” চুক্তিটি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং প্রয়োজনে পর্যালোচনা করে হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
বিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার বিআই-তে জমা তহবিলের পরিমাণ ৪৭০ ট্রিলিয়ন ইন্দোনেশিয়ান রুপি (প্রায় ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। সুদহার বৃদ্ধিতে বার্ষিক বাজেটে অতিরিক্ত ৬ ট্রিলিয়ন রুপি আয় যোগ হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক হিসাব।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিকে বড় পদক্ষেপ। সিএসইউ গ্লোবাল মার্কেটস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ রেইনাল্ডো সিমাতুপাং মন্তব্য করেন, “এটি শুধু রুপি স্থিতিশীলতা নয়, ভবিষ্যৎ সুদের হার ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কৌশলগত সমন্বয়েরও সূচনা।” তবে কিছু বাজার পর্যবেক্ষক সতর্ক করে বলেছেন, সরকারি তহবিলের ওপর উচ্চ সুদ পরিশোধ মুদ্রানীতির স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।
ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া এর আগে চলতি বছরের শুরুতে চার দফায় মোট ১.৫ শতাংশ সুদের হার বাড়িয়ে ৬.২৫ শতাংশে নিয়েছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রুপি ১ ডলারে ১৬,০০০ রুপির কাছাকাছি দুর্বল হয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করছে। নতুন সুদহার বৃদ্ধির ফলে সরকারি আয় বাড়লেও বেসরকারি ঋণের ব্যয় কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।