পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় পৌর বিএনপির কার্যালয়ে ব্যানার টাঙানোকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদ ফিরোজ ওরফে লাদেন ফিরোজ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, ফিরোজ তার স্ত্রী তাজনাহারসহ বেশ কয়েকজন নারীকে নিয়ে বিএনপি অফিসে ঢুকে হামলা চালান এবং কয়েকটি চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় বিএনপি নেতা ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রভাষক আবদুর রহমান ওয়াদুদ (৫৫) আহত হয়েছেন। ঘটনাটি মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পৌর শহরের পাবলিক মাঠ সংলগ্ন পৌর বিএনপির কার্যালয়ে ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পৌর কার্যালয়ের সামনের সড়কে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম মিজানুর রহমানের পক্ষে একটি ফেস্টুন টানানো হয়। ফিরোজ ও তার স্ত্রী তাজনাহার জায়গাটি বিরোধপূর্ণ দাবি করে ফেস্টুন টাঙানোর বিরোধিতা করেন। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, অনুষ্ঠান শেষে ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা হবে। তবে, এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ফিরোজ তার স্ত্রী ও কয়েকজন নারীকে নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে প্রবেশ করে হামলা চালান। এ সময় চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয় এবং আবদুর রহমান ওয়াদুদের মারধর করা হয়।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম মিজানুর রহমান বলেন, “প্রধান সড়কের পাশে ফেস্টুন টাঙানো কোনো অপরাধ নয়। অথচ এই কারণে আমাদের কার্যালয়ে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।” আহত আবদুর রহমান ওয়াদুদ অভিযোগ করেন, “এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পণ্ড করা। মব তৈরি করে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।”
অভিযুক্ত ফিরোজের স্ত্রী তাজনাহার দাবি করেন, “আমরা শুধু ফেস্টুন সরাতে বলেছিলাম। এরপর ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। হামলা বা ভাঙচুরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার জানান, “ভাঙচুরের বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই ঘটনা বাউফলে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। ফেস্টুন টাঙানোর মতো একটি সাধারণ বিষয়কে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রকাশ হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পুলিশের তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা এই ঘটনার প্রকৃত কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে, এ ধরনের ঘটনা স্থানীয়ভাবে শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।