পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের চর-গঙ্গমতি এলাকায় বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ১০ ফুট লম্বা একটি ইরাবতি ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে আসে। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়া উঠে যাওয়া ও একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। বন বিভাগ ও কুয়াকাটা পৌরসভা যৌথভাবে দেহটি মাটি চাপা দিয়েছে।
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন (উপরা)-এর আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু জানান, সংগঠনের টিম বন পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে চর-গঙ্গমতির জঙ্গলে ডলফিনটি দেখতে পায়। ধারণা করা হচ্ছে, ভোরের জোয়ারে মৃতদেহটি উপকূলে এসে আটকে যায়। কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, “চলতি বছর এটি নবম ডলফিন মৃত্যুর ঘটনা। আমরা ২৪ ঘণ্টা মোবাইল টিমের মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকা পর্যবেক্ষণ করছি।”
বাংলাদেশ মেটিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, বর্ষা মৌসুমে বাড়তি স্রোত ও নদীজাত দূষণের কারণে ডলফিনের মৃত্যু বেশি ঘটে। তিনি বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন সংরক্ষিত প্রজাতি হলেও দপ্তরগুলোর সমন্বয়হীনতায় প্রকৃত কারণ শনাক্ত করা যাচ্ছে না। উন্নত বিশ্বের মতো সামুদ্রিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা বাড়াতে হবে।”
মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান জানান, দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কায় দেহটি দ্রুত মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। “ডলফিন রক্ষা কমিটির মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা সদস্য পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিই। নমুনা সংগ্রহ করে প্রাণীবিদদের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে,” যোগ করেন তিনি।
ডলফিন রক্ষা কমিটি ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সরকারের কাছে জোরালো আবেদন জানিয়েছে—
– অবিলম্বে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত,
– নদী ও সমুদ্রে জালের ধরন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ,
– উপকূলে স্থায়ী সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন।