পটুয়াখালী শহরের লোহালিয়া নদী থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, যা এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে লোহালিয়া সেতুর নিচ থেকে পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তুহিন হাওলাদারের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে একই নদীর ধলু হাওলাদার বাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে অটোরিকশা চালক রেজাউলের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তুহিন হাওলাদার, স্থানীয় কালাম হাওলাদারের ছেলে, সোমবার রাতে ডিবি পুলিশের তাড়া খেয়ে লোহালিয়া নদীতে ঝাঁপ দেন বলে তার পরিবারের অভিযোগ। তুহিনের মামা সোবাহান জানান, তুহিনের স্ত্রী সুখী আক্তারের কাছে আল আমিন নামে এক ব্যক্তি ফোন করে জানায় যে, সোমবার রাত ১১টার দিকে ডকইয়ার্ড এলাকায় ডিবি পুলিশের তাড়া খেয়ে তারা নদীতে ঝাঁপ দেন। আল আমিন সাঁতরে নদী পার হয়ে ঢাকায় চলে যান, কিন্তু তুহিন নিখোঁজ হন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার গভীর রাতে তার মরদেহ ভেসে ওঠে। তুহিনের পেছনে রেখে গেছেন তার স্ত্রী, পাঁচ বছরের এক কন্যা এবং দুই মাস বয়সী এক নবজাতক সন্তান।
অন্যদিকে, রেজাউল, সদর উপজেলার ভুরিয়া ইউনিয়নের নুরু বয়াতির ছেলে, পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন। সোমবার সকালে তিনি অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন এবং আর ফিরে আসেননি। ওই দিন রাতে কাশিপুর রোড থেকে তার অটোরিকশা উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার সকালে লোহালিয়া নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ধারাবাহিক মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পটুয়াখালী শহরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তুহিনের মৃত্যু নিয়ে তার পরিবার ডিবি পুলিশের অভিযানের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও, পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক জসিম উদ্দিন জানান, সোমবার রাতে তাদের কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, উদ্ধারকৃত মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।
এই ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে তুহিনের পরিবারের অভিযোগের কারণে। ডিবি পুলিশের অভিযানের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্যের অভাব এবং দুই যুবকের মৃত্যুর রহস্য এলাকায় গুঞ্জনের সৃষ্টি করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং পুলিশের তদন্ত এই ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উন্মোচন করতে পারে। তবে, এই ধরনের ঘটনা স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পুলিশের অভিযানের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।