পটুয়াখালীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ধাওয়া এড়াতে লোহালিয়া নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তুহিন হাওলাদার (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে লোহালিয়া নদীর ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে।
পটুয়াখালী, ৩ সেপ্টেম্বর: পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের টাউন জৈনকাঠী এলাকার বাসিন্দা মো. কালাম হাওলাদারের ছেলে তুহিন হাওলাদার সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ডিবি পুলিশের ধাওয়ার মুখে লোহালিয়া নদীতে ঝাঁপ দেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ডিবি পুলিশ ডকইয়ার্ড এলাকায় অভিযান চালালে তুহিনসহ কসাই আল-আমীন এবং সিডি আল-আমীন নামে তিনজন নদীতে ঝাঁপ দেন। এদের মধ্যে কসাই আল-আমীন ও সিডি আল-আমীন সাঁতরে নদীর ওপারে পৌঁছালেও তুহিন নিখোঁজ হন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার রাতে লোহালিয়া সেতুর নিচে তার মরদেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
তুহিনের মৃত্যুতে তার স্ত্রী সুখি আক্তার, পাঁচ বছর বয়সী কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস এবং মাত্র দুই মাস বয়সী নবজাতক পুত্র আবু তাহের গভীর শোকে বিহ্বল। তুহিনের চাচাতো ভাই মো. মিরাজ বলেন, “শুনেছি, সোমবার রাতে এলাকায় ডিবি পুলিশ ঢুকেছিল। তারা তুহিন, কসাই আল-আমীন ও সিডি আল-আমীনকে ধাওয়া করে। তুহিন ও কসাই আল-আমীন নদীতে ঝাঁপ দেয়। কসাই ওপারে উঠতে পারলেও তুহিন পারেনি। মঙ্গলবার রাতে নদীতে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।”
তুহিনের মামা জানান, “মঙ্গলবার ফজরের আজানের সময় কসাই আল-আমীন তুহিনের স্ত্রীকে জানায় যে, ডিবি পুলিশ তাদের ধাওয়া করেছিল। তারা দুজন নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। কিন্তু সে ওপারে উঠতে পারলেও তুহিনকে খুঁজে পায়নি। এরপর কসাই তার শ্বশুরবাড়ি হয়ে ঢাকায় চলে যায়। আমরা তাকে ফোন দিয়েছি, কিন্তু তার ফোন বন্ধ।”
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট তদন্তে কাজ করছে। সুরতহাল প্রতিবেদনসহ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ঘটনার অন্যান্য দিক নিয়ে তদন্ত চলছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তুহিনের মৃত্যুর কারণ এবং ডিবি পুলিশের অভিযানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশ করা হবে।