পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ভারপ্রাপ্ত সুপারের কক্ষে তিনটি তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট ২০২৫) থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় সোমবার (২৫ আগস্ট ২০২৫) ক্লাস শেষে যথারীতি ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ভারপ্রাপ্ত সুপার মাসুম বিল্লাহ এসে দেখেন, তার দেওয়া তালার উপর আরও দুটি তালা ঝুলছে। পরে জানা যায়, এডহক কমিটির সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার নজির উদ্দিন এই তালাগুলো ঝুলিয়েছেন। এই ঘটনা দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে, এবং শিক্ষক মিলনায়তনে দুই পক্ষের শিক্ষকরা একে অপরের দিকে চেয়ার ছুড়তে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
আবদুল আজিজ অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের সমর্থনে এডহক কমিটির সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। তিনি বলেন, “খালিদ সাইফুল্লাহকে অপসারণ করা হলে প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে।” ভারপ্রাপ্ত সুপার মাসুম বিল্লাহ জানান, গত ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আজ সকালে এসে দেখি আমার তালার উপর দুটি তালা ঝুলছে। পরে জানতে পারি, সভাপতি ও সাবেক সুপার মিলে এই কাজ করেছেন।”
অন্যদিকে, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার নজির উদ্দিন দাবি করেন, তিনি সভাপতির নির্দেশে তালা দিয়েছেন এবং এখনও তিনি দায়িত্বে রয়েছেন। তবে, এডহক কমিটির সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাউফল উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নুরুন্নবী জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, “উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন, যাতে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। এই ধরনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।