ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোর উপর আঘাতের পর তেলের দাম সামান্য বেড়েছে, যা সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা বাজারে ইতিবাচকতা যোগ করেছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট ২০২৫) সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্স ৩ সেন্ট বা ০.০৪ শতাংশ বেড়ে ৬৭.৭৬ ডলারে পৌঁছেছে, যখন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড ফিউচার্স ৭ সেন্ট বা ০.১১ শতাংশ উর্ধ্বে ৬৩.৭৩ ডলারে লেনদেন হয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় আঘাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, যা রাশিয়ান তেল সরবরাহে বাধা সৃষ্টির আশঙ্কা জাগিয়েছে।
ইউক্রেনের হামলায় রাশিয়ার একটি বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিয়্যাক্টর এবং উস্ত-লুগা জ্বালানি রপ্তানি টার্মিনালে আঘাত লাগে, যাতে বড় আকারের অগ্নিকাণ্ড সৃষ্টি হয়। এছাড়া, রাশিয়ার নোভোশাকটিনস্ক রিফাইনারিতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণে চতুর্থ দিনও অগ্নিকাণ্ড চলছে, যার বার্ষিক ক্ষমতা ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তেল বা প্রায় ১ লাখ ব্যারেল প্রতিদিন, যা মূলত রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত হয়। এই হামলাগুলো রাশিয়ার তেল উৎপাদন এবং রপ্তানিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আইজি মার্কেট অ্যানালিস্ট টনি সাইকামোর বলেন, “ইউক্রেনের রাশিয়ান তেল অবকাঠামো লক্ষ্য করে সফলতার কারণে ক্রুড অয়েলের ঝুঁকি উর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।” এএনজেড অ্যানালিস্টরা জানান, “বাজারে ঝুঁকি-গ্রহণের মনোভাব বেড়েছে, যা জ্বালানি এবং ধাতুর মতো পণ্যের ক্ষেত্রে সরবরাহ-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে।”
এই ঘটনার পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরোম পাওয়েলের আগামী মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাব্য ইঙ্গিত বাজারে ইতিবাচকতা যোগ করেছে, যা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জ্বালানি চাহিদা বাড়াতে পারে। উত্তর প্রদেশের উপাধ্যক্ষ জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে “উল্লেখযোগ্য স্বীকারোক্তি” দিয়েছে, যার মধ্যে কিয়েভে পুতুল সরকার স্থাপনের অসম্ভবতা এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ডের অখণ্ডতার নিরাপত্তা গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনে শান্তি অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, তেলের বাজারে সরবরাহের উদ্বেগ এবং চাহিদার প্রত্যাশা মিশ্রিত হয়ে মূল্যস্থিতিশীলতা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার উৎপাদন ক্ষমতায় বাধা পড়লে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম আরও বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের মতো আমদানি-নির্ভর দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।