চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) দেশটির রাজস্ব আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি প্রথম ছয় মাসে ০.৩% হ্রাসের পর সামান্য উন্নতি নির্দেশ করে। একই সময়ে, রাজস্ব ব্যয় ৩.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রথমার্ধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং রাজস্ব আয়ের উপর চাপ অব্যাহত রয়েছে, যা মূলত সম্পত্তি বাজারের দীর্ঘস্থায়ী মন্দা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার দুর্বলতার কারণে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত রাজস্ব আয় ০.১% বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১৩.১৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে (প্রায় ১.৮৩ ট্রিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে। তবে, এই বৃদ্ধি অত্যন্ত সামান্য, এবং পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি গত কয়েক বছর ধরে স্থবির রয়েছে। বিশেষ করে, ২০২৪ সালে কর রাজস্ব ৩.৪% হ্রাস পেয়েছিল, যদিও অ-কর রাজস্ব ২৫.৪% বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক রাজস্ব হ্রাস রোধ করা সম্ভব হয়েছিল।
রাজস্ব ব্যয়ের ক্ষেত্রে, জানুয়ারি-জুলাইয়ে মোট ব্যয় ১৪.১৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা ৩.৪% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। এই ব্যয় বৃদ্ধি সরকারের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রচেষ্টার অংশ, যদিও সম্পত্তি খাতে অব্যাহত মন্দা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
চীনের অর্থনীতি বর্তমানে একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সম্পত্তি খাতে মন্দা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার দুর্বলতার কারণে স্থানীয় সরকারগুলোর রাজস্ব, বিশেষ করে ভূমি বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত আয়, উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে ভূমি বিক্রয় থেকে রাজস্ব ১৬% কমে ৪.৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে নেমে এসেছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৪৪% কম। এছাড়া, উৎপাদন খাতে মূল্য হ্রাস (ডিফ্লেশন) রাজস্ব বৃদ্ধির উপর চাপ সৃষ্টি করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের জন্য ৪% জিডিপি’র ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
চীনের রাজস্ব আয়ে সামান্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো অব্যাহত রয়েছে। সম্পত্তি খাতের সংকট, ডিফ্লেশনারি চাপ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তার কারণে সরকারকে আরও কার্যকর নীতি গ্রহণের প্রয়োজন। ভোক্তা চাহিদা বাড়াতে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সরকারের ঘোষিত আর্থিক ও মুদ্রানীতি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।