নারীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কসমেটিকস পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। গত এক বছরে অধিকাংশ পণ্যের দাম দেড়গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও।
বাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে একাধিক জনপ্রিয় কসমেটিকস পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ—পেনটেইন শ্যাম্পুর দাম ৭৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫০ টাকা হয়েছে। ওআইসি মিল্ক হোয়াইটিং ফেসওয়াশ ৩৫০ টাকা থেকে ৫১০ টাকা, নেভিয়া ক্রিম ৪৩০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ২৫০ থেকে ৩৭০ টাকা এবং ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ২৮৫ টাকা থেকে ৩৬০ টাকা হয়েছে। বডি স্প্রে, লিপস্টিক, বেবি লোশন ও তেলের দামও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
ভোক্তারা অভিযোগ করছেন, বাজারে কসমেটিকসের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। ক্রেতা সাদিয়া আক্তার বলেন, “আগে যে ব্যান্ট ২০-৩০ টাকায় কিনতাম, এখন সেটা ৫০-৭০ টাকা। শখ করে কিছু কিনলে পরেরবার এসে দেখি দাম দ্বিগুণ।” আরেক ক্রেতা নাজিয়া বেগম জানান, “৫০ টাকার জিনিস ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এত দ্রুত দাম বাড়ছে যে কেনাকাটা করতে কষ্ট হচ্ছে।”
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পটুয়াখালী শহরের আমিন ব্যাগ হাউজের মালিক আমিন মিয়া বলেন, “একটা বডি স্প্রের দামই বেড়েছে ১০০ টাকা। আগে ২৫০ টাকায় কিনলে এখন সেটা ৩৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।”
প্রজাপতি কসমেটিকসের মালিক শারমিন সুলতানা জানান, “প্রায় ১০-১৫ দিনের মধ্যেই প্রতিটি পণ্যের দাম ৭০-১০০ টাকা বেড়ে যায়। দোকান ভাড়া ও অন্যান্য খরচ মেটানোও কষ্টকর হয়ে উঠছে।” সাত সওদা কসমেটিকস হাউজের পরিচালক বলেন, “এক মাস আগেও ৫০০ টাকার পণ্য এখন ৬০০-৬১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বাড়ায় ক্রেতা কমে গেছে।”
ডিস্ট্রিবিউটার অনুপ দাস জানান, কাঁচামাল ও ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশি কসমেটিকস পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
পটুয়াখালী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. শাহ্ শোয়াইব মিয়া বলেন, “কসমেটিকস পণ্যের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের তথ্য ও দাম যাচাই করা হচ্ছে। দেশি পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই এমআরপি উল্লেখ করতে হবে। খুচরা বিক্রেতা বেশি দাম রাখলে এবং ভোক্তা প্রতারিত হলে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”