“অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি” প্রতিপাদ্য নিয়ে পটুয়াখালীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত হয়েছে। সোমবার সকালে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে এই সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু হয়, যা দেশি মাছের সংরক্ষণ ও মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে।
পটুয়াখালীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার সকাল ১০টায় সার্কিট হাউস সংলগ্ন পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়, যেখানে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আমেজ তৈরি করা হয়। এরপর শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লোকমান হাকিম।
সভায় বক্তারা মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন ও সংরক্ষণে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তারা হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছের প্রজাতি পুনরুদ্ধার এবং টেকসই মৎস্য চাষের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতি আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, “দেশি মাছের অভয়াশ্রম সৃষ্টি এবং সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা আমাদের জলাশয়গুলোকে সমৃদ্ধ করতে পারি, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এদিকে, পটুয়াখালীর উপজেলা শহরগুলোতেও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব আয়োজনের মধ্যে ছিল মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং স্থানীয় মৎস্য চাষিদের সাথে আলোচনা। এই কার্যক্রমগুলো স্থানীয় জনগণের মধ্যে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, “এই সপ্তাহের মূল লক্ষ্য হলো দেশি মাছের প্রজাতি সংরক্ষণ এবং মৎস্য চাষে আধুনিক ও টেকসই পদ্ধতি প্রচলন। আমরা স্থানীয় মৎস্য চাষিদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছি।”
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এই আয়োজন পটুয়াখালীর মৎস্য খাতে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।